শুক্রবার ● ২ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশেষ » বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সংঘাত, ক্ষতির শঙ্কায় অর্থনীতি
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সংঘাত, ক্ষতির শঙ্কায় অর্থনীতি
বজ্রকণ্ঠ ডেস্ক::

কয়েক মাস ধরে চলা বাকযুদ্ধের পর প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন এখন সরাসরি প্রভাব ফেলছে ব্যবসা-বাণিজ্যে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে।
বাংলাদেশ সরকার গত মাসে ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করে দেয়, দেশীয় শিল্প রক্ষার যুক্তি দেখিয়ে। এর আগে হঠাৎ করেই বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেয় ভারত, যার আওতায় বাংলাদেশ ইউরোপ ও আমেরিকায় পণ্য পাঠাতে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করত।
এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে বড় ধাক্কা দিয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশটি ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে, যার একটি বড় অংশ ভারতীয় পথ ব্যবহার করে দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হত।
এমজিএইচ গ্রুপের প্রধান আনিস আহমেদ বলেন, ভারতের পথ ব্যবহার করে মালামাল এক সপ্তাহে পৌঁছানো যেত, এখন সমুদ্রপথে তা আট সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নিচ্ছে। এটি দ্রুত-ফ্যাশন রপ্তানিতে বড় প্রতিবন্ধকতা।
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সাম্প্রতিক চীন সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘চীনা অর্থনীতির সম্ভাব্য সম্প্রসারণ’ হিসেবে উল্লেখ করায় ভারত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দিল্লি মনে করছে, এই মন্তব্য তাদের কৌশলগত দুর্বলতাকে সামনে এনেছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউনূসের বক্তব্যের উদ্দেশ্য ছিল আঞ্চলিক সংযোগ উন্নয়ন, তবে সেটি রাজনৈতিক উত্তেজনার শিকার হয়েছে। তিস্তা নদী প্রকল্পে চীনের ১০০ কোটি ডলারের সম্ভাব্য বিনিয়োগ এই উত্তেজনায় ঘি ঢেলেছে।
বাণিজ্যিকভাবে উভয় দেশই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। ভারত ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ১৬০ কোটি ডলারের সুতা রপ্তানি করেছে, যার এক-তৃতীয়াংশ গেছে স্থলপথে। বর্তমানে নিষেধাজ্ঞায় উভয় দেশই ক্ষতির মুখে।
বাংলাদেশের বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভারত যেভাবে তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশের পথ ব্যবহার করে সময় ও খরচ বাঁচায়, বাংলাদেশও তার দেওয়া ট্রানজিট সুবিধাগুলো পুনর্মূল্যায়ন করতে পারে।
এদিকে, দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপট আরও উত্তপ্ত। গত আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন ঘটে। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও অর্থপাচারের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকার তাকে প্রত্যর্পণের দাবি জানালেও দিল্লি এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব শ্যাম শরণ বলেন, বাংলাদেশিদের বোঝা উচিত যে আমরা হাসিনাকে সহজে তুলে দিতে পারি না। আমরা জানি, তাকে ফিরিয়ে দিলে তার কী পরিণতি হবে। আমি মনে করি, ভারতীয় জনমতও সেটি সমর্থন করবে না।
অন্যদিকে, ভারত ভিসা জটিলতা বাড়ানোয় বাংলাদেশিদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। আগে বছরে ২০ লাখের মতো বাংলাদেশি ভারত সফর করতেন, বর্তমানে ভিসা ইস্যুর হার ৮০ শতাংশের বেশি কমে গেছে।
আবার, ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টাও ভারতের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিবের সাম্প্রতিক ঢাকা সফর ছিল ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম উচ্চপর্যায়ের সফর। যদিও কাশ্মীর হামলার জেরে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রীর সফর স্থগিত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকেরা সতর্ক করছেন, দুই দেশ যদি সংযম না দেখায়, তবে কেবল রাজনৈতিকভাবে নয়, অর্থনৈতিকভাবে দুই দেশই বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। জনসাধারণের মধ্যকার সুসম্পর্কও ক্ষয়ে যেতে পারে।
সূত্র: বিবিসি
বিষয়: #অর্থনীতি #ক্ষতির #বাংলাদেশ-ভারত #বাণিজ্যিক #শঙ্কায় #সংঘাত




এক বিরল সাক্ষাৎকারে, প্রাক্তন স্বৈরাচারী নেত্রী শেখ হাসিনা দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন যে তার ক্ষমতাচ্যুতির সময় রক্তপাতের জন্য তিনি দায়ী নন, এবং অনুপস্থিতিতে তার বিচারকে ‘প্রতারণা’ বলে অভিহিত করেছেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব লর্ডসে উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠক!
ছুটির দিনেও ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস
সিলেট-২: নিখোঁজ নেতার ত্যাগের প্রতীক, তাহসিনা রুশদীর লুনা সেই ত্যাগের উত্তরসূরি
যুক্তরাজ্যে জননেতা সুলতান মাহমুদ শরীফের স্মরণে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত
ভোরের দর্পণের সাহিত্য পাতায় আমার একটি বই আলোচনা প্রকাশ পায়, আপন্রাা দেখতে পারেন ’রূপসী ওয়েলসের কোলে ছোট্ট এক বাংলাদেশ”।
শিক্ষাসংস্কারে চাই সুস্পষ্ট লক্ষ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
সঙ্গীত চৰ্চা ও ধর্ম শিক্ষা: তর্ক-বিতর্কের জায়গাটি কোথায়?
স্থানীয় থেকে জাতীয় সর্বত্র অস্থিতিশীলতা বহুমুখী সংকটে ব্রিটিশ লেবার পার্টি
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ও পাঠাগার আন্দোলনের পথিকৃত ভাষা সৈনিক মুহম্মদ নুরুল হক
