

শুক্রবার ● ১ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » নবীগঞ্জ » মোবাইল ফোনে প্রেম, ধরাশায়ী অত:পর বিয়ে, চার মাসের মাথায় প্রেমিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার! ২দিন পর মৃত্যু, নবীগঞ্জ থানায় হত্যার অভিযোগ মামলা
মোবাইল ফোনে প্রেম, ধরাশায়ী অত:পর বিয়ে, চার মাসের মাথায় প্রেমিকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার! ২দিন পর মৃত্যু, নবীগঞ্জ থানায় হত্যার অভিযোগ মামলা
বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় আউশকান্দি ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের ১৭ বছর বয়সী সেতু মিয়া নামের এক যুবক গজনাইপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের আরিফা এর সাথে দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এতে, তারা কয়েকবার ধরাশায়ীও হয়েছিল। পরে সামাজিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের মেহেদী মাখা হাতের রং মুছার পূর্বের তাদের দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে কাল বৈশাখী ঝড়। ভালোবেসে বিয়ের ৪ মাসের মাথায়ই প্রেমিকা হুবু স্ত্রী’র বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে প্রেমিক হুবু স্বামী সেতু মিয়া (১৭)। সে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার পুত্র। ঘটনাটি ঘটেছে নবীগঞ্জ উপজেলার ১১নং গজনাইপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামে গত (২৭ জুলাই) রবিবার দুপুর অনুমান ২টার দিকে।
এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারিক সূত্রে জানাযায়, দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে আলমপুর গ্রামের সেতুর মিয়া বনগাঁও গ্রামের সুন্দরী তরুণী আরিফা বেগমের সাথে। তাদের প্রেম লিলার বিষয়টি জানা জানি হলে প্রেমিকা তরুণীর পরিবারের লোকজন প্রেমিক সুেতুকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। অবশেষে নিরুপায় হয়ে দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে কথাবার্তা শেষে সামাজিকভাবে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহখানেক পর থেকেই তাদের নব দম্পত্তির হাতের মেহেদীর রং মুছার পূর্বেই দাম্পত্য জীবনে নেমে আসে কাল বৈশাখী ঝড়।
এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের লোকজন আরো অভিযোগ করে বলেন, নিহত সেতু’র স্ত্রী আরিফা বেগম সেতুকে সব সময়ই টাকার জন্য তাকে চাপ দিত। এমন কি টাকা না দিলে তাকে সব সময় শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। সম্প্রতি, তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে গেলে তার স্বামী সেতুকেও তার সাথে নিয়ে যান। এরপর গত (২৭ জুলাই) এক অজ্ঞাত সিএনজি চালক সেতুর মায়ের মোবাইল ফোনে কল করে জানায়, বনগাঁও গ্রামের মতলিব মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তার পাশে সেতু মিয়া অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এমন কথা শুনে কান্না জড়িত কন্ঠে সেতু’র মা ঐই ব্যাক্তিকে আকুতি মিনতি করে বলেন যে, তুমি আমার ছেলের মতো, দয়া করে আমার ছেলেকে হাসপাতালে পাঠাও বাবা…। তার মায়ের আকুতি মিনতির ও নানান অনুরোধে অজ্ঞাত ঐ সিএনজি চালক সেতু মিয়াকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এতে, সেখান নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থার বেগতিক দেখে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট এম,এ,জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর গত ৩০ জুলাই রাত ১২টা ৩০মিনিটের সময় সেতু মিয়া মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়ে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার এস,আই মোঃ খবির উদ্দিন ঘটনাস্থল হাসপাতালে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে এসে লাশের ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ কামরুজ্জামান এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা নিহতের মায়ের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে প্রকৃত ঘটনার রহস্য এখনও উন্মোচন করা সম্ভব হচ্ছেনা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলেই জানা যাবে আসল ঘটনাটি। এবং দ্রুত এর আইনানুগ ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।
বিষয়: #ধরাশায়ী #প্রেম #ফোন #মোবাইল