

শনিবার ● ১০ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » সুনামগঞ্জ » পাউবো কর্তৃপক্ষের দায়সারা দোয়ারাবাজারে সুরমার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম
পাউবো কর্তৃপক্ষের দায়সারা দোয়ারাবাজারে সুরমার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম
ছাতক, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
দোয়ারাবাজার উপজেলার নদী ভাঙনরোধে বাস্তবায়িত হয়েছে শতকোটি টাকার প্রকল্প। শতকোটি ভাঙনরোধে প্রকল্পের ছোঁয়া লাগেনি উপজেলা সদরের পশ্চিম মাছিমপুর ও সাইডিং ঘাট এলাকা ।
এ উপজেলায় নদী ভাঙন সমস্যা নতুন নয়। কয়েক যুগ ধরেই চলছে। তবে এক দশক ধরে ভাঙনের মাত্রা তীব্র আকার ধারণ করেছেন। বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক থেকে শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করেও আশ্বাস ছাড়া আর কোনো কাজ হয়নি।
ভাঙন প্রতিরোধে এখনি দ্রুত কোনো উদ্যোগ না নেওয়া হলে পুরো গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে ষাটোর্ধ্ব মোজাহিদ মিয়া (৬৮)। চোখের সামনেই সুরমা নদীর গর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন নিজের বসত ভিটা, ফসলি জমি ও গাছপালা। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে পরপর তিনবার বসতঘর স্থানান্তর করতে হয়েছে তাকে। সুরমায় পৈতৃক বাড়ি, জমি-জমা সবকিছু হারিয়ে এখন মাথা গোঁজার শেষ সম্বল বাড়ি টুকু নিয়ে দুশ্চিন্তায় সময় কাটছে তার। ভয় হয় কখন জানি এই বাড়িকেও গ্রাস করে বসে সুরমার ভাঙনে। মোজাহিদ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের পরিবারের তিন প্রজন্মের জমি-জমা, বসত বাড়ি সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আমাদের আর কোনো জমি নেই।’ দুলাল মিয়া বলেন, ‘নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি জমি-জমা হারিয়ে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার এখন উদ্বাস্তু। কেউ সরকারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে উঠেছে, কেউ অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছেন আবার কেউ এলাকার বাইরে চলে গেছে।
শুধু মোজাহিদ এবং দুলাল মিয়াই নয়, সুরমার ভাঙনে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মাছিমপুরের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দারা প্রতিনিয়তই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতি বছরই গ্রামের অন্তত দুই থেকে পাঁচটি করে পরিবার ঘর স্থানান্তর করছেন নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। ভাঙতে ভাঙতে এখন গ্রামের অর্ধেকই বিলীন হয়ে গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দোয়ারাবাজার উপজেলা শাখার আহ্বায়ক ও স্থানীয় বাসিন্দা এসার মিয়া বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দোয়ারাবাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। সবচেয়ে বেশি ভাঙন কবলিত পশ্চিম ও পূর্ব মাছিমপুর গ্রামকে এই প্রকল্পের বাইরে রাখা হয়েছে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে। বর্তমানে ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন।’দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান মিজু বলেন, ‘ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে একাধিক বার লিখিতভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু আমাদেরকে বঞ্চিত করে রাখা হয়। নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজে আমাদের এলাকাকে বাদ দিয়ে অন্য এলাকায় কাজ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দোয়ারাবাজারের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অ.দা) মো. শমশের আলী এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ‘সুরমা নদী ভাঙন কবলিত পূর্ব মাছিমপুর ও পশ্চিম মাছিমপুরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট প্রেরণ করা হয়।’
বিষয়: #কর্তৃপক্ষ #গ্রাম #দায়সারা #দোয়ারাবাজার #পাউবো #বিলীন #ভাঙন #সুরমা #হচ্ছে