

বুধবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » জাতীয় » ডাকসু রাজনৈতিক দলের এক্সটেনশন গেমে পরিণত হয়েছে: হাসনাত
ডাকসু রাজনৈতিক দলের এক্সটেনশন গেমে পরিণত হয়েছে: হাসনাত
বজ্রকণ্ঠ ::
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনকে ঘিরে দলগুলো যেভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নিজেদের প্রভাব দেখিয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পেশিশক্তি, জনশক্তি এবং সংগঠিত উপস্থিতির মাধ্যমে ভোটের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেয়ার যে চেষ্টা চলছে, তা ছাত্র রাজনীতির নিজস্ব চরিত্রকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।
পোস্টে হাসনাত লেখেন, ডাকসু এখন কেবল ছাত্রদের ম্যান্ডেট বহন করছে না, বরং জাতীয় রাজনৈতিক দলের একটি এক্সটেনশন গেমে পরিণত হয়েছে। যা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। আজ এর পাশাপাশি শিক্ষক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সবার প্রতি এক ধরনের গণহারে ট্যাগ বসানোর প্রবণতাও স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। এই প্রবণতা শেখ হাসিনার শাসনামলের রাজনৈতিক বাস্তবতারই ধারাবাহিকতা। যেখানে বিভাজন, সন্দেহ আর দমননীতি প্রাতিষ্ঠানিক ছিল। এই মানসিকতা দীর্ঘমেয়াদে রাজনীতিকে অনিরাপদ ও সংকুচিত করে তুলবে। পোস্টে ট্যাগিং ও বর্গীয় রাজনীতির অবশ্যই অবসান হতে হবে বলেও লেখেন তিনি।
তিনি আরও লেখেন, আজ ডাকসুতে জয়ীরা কীভাবে দায়িত্ব নেবে এবং পরাজিতরা কীভাবে তা গ্রহণ করবে, এই দুইটি প্রশ্নের উত্তর আমাদের জাতীয় রাজনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে তা বলে দেবে।
হাসনাত লেখেন, ছাত্র রাজনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হলে এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যেখানে নিয়মিতভাবে নতুন নেতৃত্ব আসবে এবং পরাজয়কে পরবর্তী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হবে। ডাকসু নির্বাচন সেই সংস্কৃতি তৈরির একটি সম্ভাব্য শুরু হতে পারত। হতে পারত বলছি, কারণ এই ভোটের ফলাফল গ্রহণ নিয়ে এখনো এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক দলগুলো ফলাফলকে ঘিরে শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর।
তিনিও লেখেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের উচিত ভোটারদের রায়কে সম্মান করা এবং জনগণের চাওয়াকে মাথা পেতে নেয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা। সব সময় জয়ী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র নয়। গণতন্ত্রের অন্যতম মূল ভিত্তি হচ্ছে সহিষ্ণুতা। যাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে অপছন্দ করি, তাকেও যদি জনগণ বেছে নেয়, সেই বেছে নেওয়াকে সম্মান করাই গণতন্ত্র।
সবশেষে তিনি লেখেন, এই পরিস্থিতিতে আমি দেশের সব রাজনৈতিক দলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। নিজেদের স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করার ফলাফল গত ১৭ বছর ধরে দেখেছি। এখন সময় এসেছে এই চক্র থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের চাওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়ার। পরাজয়কে সম্মানিত করার সংস্কৃতি গড়ে তোলার। নাহলে আগামী দিনের রাজনীতি জয়ীদের উল্লাস আর পরাজিতদের ক্ষোভে বন্দী থেকে যাবে, আর গণতন্ত্র কোনদিন পূর্ণতা পাবে না।
বিষয়: #ডাকসু #রাজনৈতিক #হাসনাত