শিরোনাম:
ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বজ্রকণ্ঠ "সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা", সিলেট ঢাকা লন্ডন নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত। লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন ই-মেইল: ঠিকানা:- [email protected] অনুগ্রহ করে সংবাদ প্রতিবেদন, ছবি এবং ছোট ভিডিও পাঠান। ভিজিট করুন: www.bojrokontho.com Founder and Chief Executive Editor:Syed Akhtaruzzaman Mizan, Mobile Number : +8801781529003 (SMS text Message first then Direct Calls) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সম্পাদক: সৈয়দ আখতারুজ্জামান মিজান মোবাইল নম্বর: +৮৮০১৭৮১৫২৯০০৩ (প্রথমে এসএমএস টেক্সট মেসেজ তারপর সরাসরি কল)

Bojrokontho
মঙ্গলবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং
২১৪ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং

বজ্রকণ্ঠ অনলাইন নিউজঃ
এত বিদ্যুৎকেন্দ্র, তবু কেন লোডশেডিং
জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চাহিদাকেও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে, সরকারের দায় বেড়েছে। অথচ তিন বছর ধরে গরম বাড়লেই লোডশেডিংয়ে ভুগতে হচ্ছে মানুষকে।

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েও (গত ৮ আগস্ট) পড়েছে একই সমস্যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি নেই। ফলে বেড়েছে লোডশেডিং। গতকাল সোমবার গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হয়েছে।

তিন দিন ধরে লোডশেডিং বাড়ছে। ঢাকার বাইরে কোনো কোনো এলাকায় গ্রামাঞ্চলে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। যদিও দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার ৭৯১ মেগাওয়াট। চাহিদা এখন ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র বলছে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের একটি টার্মিনাল (সামিটের মালিকানাধীন) তিন মাস ধরে বন্ধ। এতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ছে না। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এক হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন কমেছে। বিল বকেয়া থাকায় আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ কমেছে ৫০০ মেগাওয়াট। বেসরকারি খাতের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও সর্বোচ্চ চাহিদায় উৎপাদন করা যাচ্ছে না। কারণ, তারাও অনেক টাকা পাবে। তাই ঘাটতি পূরণে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।

দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭ মে থেকে বন্ধ। এতে এলএনজি সরবরাহ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট।

সার্বিকভাবে দিনে এখন গ্যাস সরবরাহ নেমে এসেছে ২৬০ কোটি ঘনফুটে। বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ কমে দাঁড়িয়েছে ৮২ কোটি ঘনফুট। আড়াই মাস আগেও গ্যাস থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হতো। এখন হচ্ছে ৫ হাজার মেগাওয়াট।

কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭ মে থেকে বন্ধ। এতে এলএনজি সরবরাহ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট।

ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিত আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দিনে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা। তাদের বিদ্যুৎ বিল পাওনা দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি ডলারের (প্রায় সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা) বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৫০ কোটি ডলার (৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা) পরিশোধের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে। বকেয়া বিল পরিশোধে চাপ দিচ্ছে তারা। কেন্দ্রটির কয়লা আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। এতে উৎপাদন কমিয়ে এক হাজার মেগাওয়াটে আনা হয়েছে।

পিডিবির সদস্য (উৎপাদন) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন বলেন, গ্যাসের সরবরাহ কম, বকেয়া বিলের চাপ থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমেছে। বকেয়া পরিশোধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। শিগগিরই পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

ভোগান্তি বেশি ঢাকার বাইরে
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হলে লোডশেডিং বেশি করা হয় গ্রামাঞ্চলে। ঘাটতি অনেক বেশি হলে রাজধানী ঢাকায়ও লোডশেডিং করতে হয়। ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। এ দুটি সংস্থার দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, গতকাল বিকেল চারটা থেকে ডিপিডিসি ১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করেছে। আর সন্ধ্যায় ১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করেছে ডেসকো। এর বাইরেও দিনের বিভিন্ন সময় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের খোঁজ পাওয়া গেছে।

ঢাকার বাইরে শহর এলাকায়ও কিছু লোডশেডিং হচ্ছে। তবে বেশি হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে, যেখানে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সূত্র বলছে, গতকাল চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কম পাওয়া গেছে। গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াট করে লোডশেডিং করতে হয়েছে। এর মধ্যে কোনো কোনো এলাকায় লোডশেডিং ছিল না। আবার কোনো কোনো এলাকায় ৫০ শতাংশের বেশি ঘাটতি ছিল। এতে দিনের প্রায় অর্ধেক সময় লোডশেডিং করতে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা অঞ্চলে।

ময়মনসিংহ থেকে বিভাগের চার জেলা ছাড়াও কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পাওয়ার গ্রিড পিএলসির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে আটটায় চাহিদা ছিল ১ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট। এর মধ্যে বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে ৯৩২ মেগাওয়াট।

পরিস্থিতি কী, তা তুলে ধরেন ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩–এর উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) অনিতা বর্ধন। তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকার পর, এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

পিডিবির কুমিল্লা অঞ্চল সূত্র জানায়, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনী—এই ছয় জেলায় গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১ হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট। গতকাল সকালে ৮০০ মেগাওয়াট ও সন্ধ্যায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট সরবরাহ হয়েছে। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর মহাব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘সমিতিতে গড়ে ৬৫ মেগাওয়াট চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি।’

বিদ্যুৎ নিয়ে গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৪–এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং থাকে মনোহরগঞ্জের দক্ষিণ এলাকায়। আমরা গড়ে ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পেয়ে থাকি। বাকি সময় লোডশেডিং থাকে। বিদ্যুৎ নিয়ে এ এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।’

বাড়তি উৎপাদনক্ষমতার বিপরীতে কেন্দ্রভাড়া দিতে গিয়ে সরকার বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। তাতেও ওঠেনি উৎপাদন খরচ। তখন দিতে হয়েছে বিপুল ভর্তুকি, যা সরকারের আর্থিক সক্ষমতার ওপর চাপ ফেলেছে। চাপে পড়েছে অর্থনীতিও।
অপ্রয়োজনে বেড়েছে সক্ষমতা

ব্যাপক লোডশেডিং থেকে মুক্তি পেতে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল) বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ শুরু করে। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বেশি হারে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া শুরু হয়। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ পাস করা হয়, যা দায়মুক্তি আইন নামে পরিচিত। এ আইনের অধীন দরপত্র ছাড়াই নির্মাণ করা হয় একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রথমে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা যুক্ত হলেও পরে আওয়ামী লীগের নেতারা নিতে থাকেন বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ভারত থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়।

দেড় দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বেড়েছে পাঁচ গুণের বেশি, উৎপাদন বেড়েছে ৩ দশমিক ৬ গুণ। আর কেন্দ্রভাড়া বেড়েছে ১৬ গুণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মূলত বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে এভাবে অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময় দেখা গেছে, ৫ হাজার থেকে বেড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা হয়েছে প্রায় ২৮ হাজার মেগাওয়াট, যা চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ। যদিও অর্ধেকের মতো সক্ষমতা অলস পড়ে থাকে। পরিশোধ করতে হচ্ছে সক্ষমতার ভাড়া, যা ক্যাপাসিটি চার্জ নামে পরিচিত।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সাবেক সদস্য (বিদ্যুৎ) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ২০২১ সালে চাহিদা হওয়ার কথা ছিল ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। বাস্তবেও অনেকটা তাই হয়েছে। ২৫ শতাংশ বাড়তি ধরে উৎপাদনসক্ষমতা হওয়ার কথা ছিল ১৮ হাজার মেগাওয়াট। করা হয়েছে ২২ হাজার মেগাওয়াট (২০২১)।

দরপত্র ছাড়া খেয়াল-খুশির চুক্তি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে এটি করেছে। কেন্দ্রভাড়া দিতে দিতেই দেউলিয়া হওয়ার দশা। বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি সংশোধন বা বাতিল করতে হবে।
বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞ ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম

বাড়তি উৎপাদনক্ষমতার বিপরীতে কেন্দ্রভাড়া দিতে গিয়ে সরকার বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। তাতেও ওঠেনি উৎপাদন খরচ। তখন দিতে হয়েছে বিপুল ভর্তুকি, যা সরকারের আর্থিক সক্ষমতার ওপর চাপ ফেলেছে। চাপে পড়েছে অর্থনীতিও। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে কেন্দ্রভাড়া ছিল ২ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। সবশেষ অর্থবছরের (২০২৩-২৪) হিসাব চূড়ান্ত হলে তা ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে পিডিবি সূত্র।

দেড় দশক আগে প্রতি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ছিল গড়ে ২ টাকা ৫৩ পয়সা, এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ১১ টাকা ৩৩ পয়সা। দেড় দশকে পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার ও খুচরা পর্যায়ে ১৪ বার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা ৭৬ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। এরপরও প্রতিবছর সরকারি ভর্তুকি বরাদ্দের ওপর চাপ বাড়ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটেও ৪০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা আছে।

বিদ্যুৎ খাতে উৎপাদনক্ষমতা, খরচ কেন বাড়ল ইত্যাদি নিয়ে গত ২৫ আগস্ট বিদ্যুৎ বিভাগে একটি ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যুৎ খাতের দুজন ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বাড়তে থাকে। এটি হয়েছে মূলত জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায়। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয়ের ৬৫ শতাংশ হয় জ্বালানির দাম বাবদ। সেই জ্বালানির দাম বেড়েছে ১৬৩ শতাংশ। এটা না হলে বিদ্যুৎ খাতে কোনো ভর্তুকির প্রয়োজন হতো না। আর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া নিয়েও কেউ প্রশ্ন তুলত না।

যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তিগুলোই হয়েছে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করে, যা সংকটে ফেলেছে মানুষকে। নতুন সরকার চুক্তিগুলো পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীকে কমিটির আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর। দরপত্র ছাড়া গত সরকারের করা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করবে কমিটি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, জ্বালানি নিশ্চিত না করেই বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি পর্যালোচনা করে কমিটি প্রতিবেদন দেবে। কোনো অনিয়ম পেলে কমিটি সুপারিশও করবে। একটু সময় লাগবে। তবে মেয়াদ শেষে কোনো কেন্দ্রের চুক্তি নবায়ন করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র অধিকাংশ সময় অলস বসে থাকে, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হবে না, এটা মাথায় রেখেই কাজ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দরপত্র ছাড়া ‘খেয়াল-খুশির’ চুক্তি
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একেক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে একেক রকম দাম ধরে চুক্তি হয়েছে। সবার ক্ষেত্রে কেন্দ্রভাড়া সমহারে নির্ধারিত হয়নি। সমঝোতার মাধ্যমে কেউ কেউ এটি বাড়িয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া চুক্তিতে সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে মার্কিন ডলারে। ডলারের দাম দুই বছরে ৮০ থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হওয়ায় ৪০ শতাংশ খরচ বেড়েছে পিডিবির। যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনো বিদেশি ঋণ নেই, তাদের কেন্দ্রভাড়ার হিসাব টাকায় করা হলে এ খরচ বাড়ত না। এখন চুক্তি সংশোধন করা যেতে পারে। এটি করা গেলে পিডিবির খরচ অনেক কমে যাবে।

বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞ ও কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, দরপত্র ছাড়া খেয়াল-খুশির চুক্তি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে বিপদে ফেলতে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে এটি করেছে। কেন্দ্রভাড়া দিতে দিতেই দেউলিয়া হওয়ার দশা। বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি সংশোধন বা বাতিল করতে হবে। সুত্র: প্রথম আলো



বিষয়: #  #  #  #  #


প্রধান সংবাদ এর আরও খবর

রাণীনগরে মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার রাণীনগরে মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
সোনাইমুড়ীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, চালক নিহত, আহত ১২ সোনাইমুড়ীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, চালক নিহত, আহত ১২
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় “আন্তঃবাহিনী সাঁতার, ওয়াটারপোলো ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা’ সমাপ্ত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় “আন্তঃবাহিনী সাঁতার, ওয়াটারপোলো ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা’ সমাপ্ত
ছড়াকার মিলু কাসেম: সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতির উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের বিদায় ছড়াকার মিলু কাসেম: সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতির উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের বিদায়
ছাতক-দোয়ারাবাজার রুট: ভারতীয় গরু- মহিষ চোরাচালানের নিরাপদ করিডোর ছাতক-দোয়ারাবাজার রুট: ভারতীয় গরু- মহিষ চোরাচালানের নিরাপদ করিডোর
দৌলতপুর কোর্ট পরিদর্শন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি দৌলতপুর কোর্ট পরিদর্শন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি
সুন্দরবনের কচিখালীতে নিখোঁজ পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড সুন্দরবনের কচিখালীতে নিখোঁজ পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড
সুন্দরবনে কোস্টগার্ডের অভিযানে হরিণের মাংসসহ চোরা শিকারি আটক সুন্দরবনে কোস্টগার্ডের অভিযানে হরিণের মাংসসহ চোরা শিকারি আটক
নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় শুরু হলো ‘আন্তঃবাহিনী সাঁতার, ওয়াটারপোলো ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা-২০২৫’ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় শুরু হলো ‘আন্তঃবাহিনী সাঁতার, ওয়াটারপোলো ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা-২০২৫’
মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু

আর্কাইভ

সিলেট শহরের সকল হবিগঞ্জী --- --- ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
রাণীনগরে মাদক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার
সোনাইমুড়ীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে বাসের ধাক্কা, চালক নিহত, আহত ১২
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় “আন্তঃবাহিনী সাঁতার, ওয়াটারপোলো ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা’ সমাপ্ত
ছড়াকার মিলু কাসেম: সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতির উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের বিদায়
ছাতক-দোয়ারাবাজার রুট: ভারতীয় গরু- মহিষ চোরাচালানের নিরাপদ করিডোর
দৌলতপুর কোর্ট পরিদর্শন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি
সুন্দরবনের কচিখালীতে নিখোঁজ পর্যটকের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড
সুন্দরবনে কোস্টগার্ডের অভিযানে হরিণের মাংসসহ চোরা শিকারি আটক
নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় শুরু হলো ‘আন্তঃবাহিনী সাঁতার, ওয়াটারপোলো ও ডাইভিং প্রতিযোগিতা-২০২৫’
মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু