

বুধবার ● ১৪ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রবাসে » জ্যাকসন হাইটসে আড্ডায় আমরা তিন জন।
জ্যাকসন হাইটসে আড্ডায় আমরা তিন জন।
শেখ শফিকুর রহমান,নিউইয়র্::
আজ মঙ্গলবার ১৩ই মে বিকেল বেলা আমাকে যেতে হলো জ্যাকসন হাইটসে।যেহেতু আমি ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার এলাকায় বসবাস করি তাই সাবওয়ে সিক্স ট্রেনে চড়ে পার্কচেস্টার থেকে প্রথমে ম্যানহাটনের ফিফটি নাইনস্টেশন পর্যন্ত।তারপর গাড়ি বদলে আর ট্রেনে রোজভেল্ট এভিনিউ জ্যাকসন হাইট স্টেশন গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে ভূগর্ভস্থ থেকে সিঁড়ি বেয়ে মাটির উপরে উঠে আসলাম।নিউইয়র্কে বেশ কিছু ট্রেন ভূগর্ভস্থ নিচ দিয়ে চলে আর কিছু মাটির উপরে ও চলে।সাবওয়ে দিয়ে চলাচল করলে যে কোন স্থানে তাড়াতাড়ি বা যথা সময়ে পৌঁছা যায়।সাবওয়ে গুলো সকাল বেলা আর বিকাল বেলা পিকহায়ার থাকে।পিকহাওয়ারে সাবওয়ের ট্রেন গুলোতে এত বেশি যাত্রী থাকে যে তিল ধারনের জায়গা থাকে না।জ্যাকসন হাইটস নিউইয়র্কে বসবাসকারী বাংলাদেশের মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান যেখানে সবাই একবার হলেও গিয়ে থাকবেন।আমার অভিজ্ঞতা হলো আমি পাঁচ বছর আগে প্রথম নিউইয়র্ক এসে কাজ নিয়েছিলাম পাপায়াজ চিকেন রেস্টুরেন্টে।সেখানে ছিলেন আমার এক সহকর্মী পাকিস্তানি নাগরিক নাম জামিল ভাই।সে জ্যাকসন হাইটসে বসবাস করতো এবং আমরা যেখানে কাজ করতাম ব্রঙ্কসের থার্ড এভিনিউর ওয়ান ফিরটি নাইন স্টোরে।তাকে বললাম জামিল ভাই ম্যা কভি জ্যাকসন হাইট নেহি গিয়া আপকা সাথ জানাহুগা।সে বলে কই বাত নেই ম্যা লেকে যায় গা।তারপর তার সাথে প্রথম জ্যাকসন হাইট যাই।তারপর তো প্রতি সপ্তাহেই জ্যাকসন হাইটসে ঘুরতে গিয়েছি।আজকে সাবওয়ে স্টেশন থেকে একা হাঁটতে হাঁটতে মুল বাজার নবান্ন প্রিমিয়ার রেস্টুরেন্টের দিকে আসলাম।তখন বিকেল বেলা পরিচিত কাউকে না পেয়ে সোজা চা খেতে প্রিমিয়ার রেস্টুরেন্টের প্রবেশ মুখে দেখা হয়ে যায় নিউইয়র্কের জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি কমিউনিটির সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব মইনুল হক চৌধুরী হেলাল ভাইয়ের সাথে।আমাকে দেখে বললেন শফিক ভাই আপনাকে পেয়ে ভালো হলো ভিতরে চলেন।আমরা দুজন ভিতরে গিয়ে দেখি বসে আছেন সিলেটের আরেক বিখ্যাত এডভোকেট ও কবি সুফিয়ান আহমেদ চৌধুরী ভাই।হেলাল ভাই বললেন শফিক ভাই আমি চলে যাবো আসেন আমরা তিনজনে মিলে একটা সেলফি ছবি তুলে রাখি।তখন আমি আমার মোবাইল দিয়ে আমরা তিনজনের ছবি তুলে হেলাল ভাইকে বিদায় জানাই।পরে কবি সুফিয়ান ভাই চায়ের আমন্ত্রণ জানালে তাকে বলি আমি চা খাবো।তিনি আমার জন্য চা নিয়ে আসলেন।দুজনে বসে এবার প্রথমে পরিচয় পর্ব সেরে নিলাম।বলে রাখি হেলাল চৌধুরী ভাইয়ের সাথে নিউইয়র্কে বিভিন্ন সমিতির নানান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আগেই পরিচয় হয়ে গিয়েছিল।তাই হেলাল ভাইয়ের সাথে একটা সখ্যতা গড়ে উঠেছে।যেহেতু আমি একজন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাংবাদিক তার জন্য সংগঠনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আরো বেশি সখ্যতা তৈরি হয়েছে।যেহেতু কবি সুফিয়ান চৌধুরী ভাইয়ের সাথে পুর্বে ব্যক্তিগতভাবে পরিচয় ছিলনা।যেটা ছিল শুধু ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়।তারজন্য অবশ্য আগেই চেনাজানা ছিলো তার লেখালেখি সম্পর্কে।চায়ের আড্ডায় পুরো সিলেট বিভাগের অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করছি দুজনে।এরি ফাঁকে সুফিয়ান ভাই মিশিগানে বসবাসরত সিলেট বেতারের গীতিকার হেলাল উদ্দিন রানা ভাইকে মোবাইল কল করে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।কথা প্রসঙ্গে রানা ভাইয়ের সাথে তার গান নিয়ে আলোচনা হয় এবং তার একটা অত্যন্ত জনপ্রিয় গান “এই কলমি লতা হিরামতির গায়” গানটির কিছু গেয়ে শুনালাম।তিনি বললেন গান শুনি কি না বললাম।আমি এক সময় সিলেট বেতারে গীতিকার হিসেবে কন্ঠ শিল্পী হিসেবে ও নাট্য শিল্পী হিসেবে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সফল হয়নি।একটু আক্ষেপ ছিল তাকে বিষয়টি জানালাম।সাথে দুজন স্মৃতি রোমন্থন করলাম।সেই সময় সিলেট বেতারে ছিলেন অনুষ্ঠান প্রযোজক সাজেদা বেগম,শিবু ভট্টাচার্য,শ্রীমঙ্গল উপজেলার গীতিকার শিল্পী একে আনাম,রঙ্গলাল দেব চৌধুরীর কথা।আজ অনেকেই বেঁচে নেই।বেতারে সুযোগ পাওয়ার জন্য মীরের ময়দান স্টুডিওতে কতবার যে গিয়েছি তার হিসেব নেই।রানা ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মোবাইল ফোন রেখে দিলাম।তারপর আবার সুফিয়ান ভাইয়ের সাথে দীর্ঘ সময় আড্ডা দিতে দিতে দুজনে একটা সেলফি তুলে রাখলাম।যেহেতু আমি নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের একটি সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলাম তাই সুফিয়ান চৌধুরী ভাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিলাম আরেকবার দেখা হবে বলে।নিউইয়র্কে মিনি বাংলাদেশ খ্যাত জ্যাকসন হাইটসে প্রিমিয়াম রেস্টুরেন্টে চায়ের আড্ডায় সিলেট বারের খ্যাতিমান এডভোকেট কবি সুফিয়ান আহমেদ চৌধুরী ভাইকে সাথে নিয়ে আমি প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সাংবাদিক শেখ শফিক সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক দীর্ঘ আড্ডায় বেশ ভালো সময় কাটালাম।
লেখক:: শেখ শফিকুর রহমান, , সাংবাদিক ও কলামিস্ট, নিউইয়র্ক।
বিষয়: #আড্ডায় #আমরা #জন #জ্যাকসন #তিন #হাইটস