

শুক্রবার ● ২০ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » রান্না --রেসিপি » বর্ষার দিনের মুখরোচক খাবার
বর্ষার দিনের মুখরোচক খাবার
বজ্রকণ্ঠ ডেস্ক::
বৃষ্টিভেজা বিকেল মানেই এক রকম অন্য রকম ভালো লাগা। চারপাশের স্নিগ্ধতা, হালকা ঠান্ডা হাওয়া, আর জানালার পাশে বসে চা হাতে গল্পের আসর। সব মিলিয়ে বর্ষাকালের বিকেল যেন আপন মনে কিছুক্ষণের জন্য জীবনকে থামিয়ে রাখে। এমন মুহূর্তে মনের গভীর থেকে উঠে আসে চটপটে কিছু খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু শুধুই তো বিস্কুট বা চানাচুর নয়, বর্ষাকাল মানে হচ্ছে এমন কিছু খাবার যা মনের সঙ্গে সঙ্গে শরীরকেও সান্ত্বনা দেয়। চলুন জেনে নিই এমন কিছু পারফেক্ট খাবারের কথা, যেগুলো বৃষ্টিকে করে তোলে আরও উপভোগ্য।
১. খিচুড়ি
সবচেয়ে আগে যার কথা বলতে হয় তা হলো খিচুড়ি। গরম গরম ভুনা খিচুড়ির সঙ্গে আলুভাজি, বেগুনভাজি বা ডিমভাজি এই কম্বিনেশন বর্ষায় এক অনন্য অনুভূতি এনে দেয়। এমনকি অনেকে পেঁয়াজের বড়া বা বেগুনির সঙ্গে খিচুড়ি খেতেও ভালোবাসেন। বৃষ্টির দিনে বাইরে বের হওয়া না গেলে ঘরেই হালকা উপকরণ দিয়ে রান্না করা যায় এমন একটি আদর্শ খাবার হলো খিচুড়ি। এটি যেমন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তেমনি একটুখানি মসলা আর ঘ্রাণেই মন ভালো হয়ে যায়।
২. পাকোড়া
এরপরেই আসে চায়ের সঙ্গে সেরা সঙ্গী, পাকোড়া। বর্ষার দিনে পেঁয়াজ, আলু, ধনে পাতা বা কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে তৈরি মুচমুচে পাকোড়া যেন সন্ধ্যার আড্ডাকে পূর্ণতা দেয়। গরম গরম চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে পাকোড়ার ঝাঁজে এক রকম ঘরোয়া উষ্ণতা পাওয়া যায়। যারা ভেজিটেরিয়ান তাদের জন্য মিক্সড ভেজিটেবল পাকোড়াও দারুণ একটা অপশন।
৩. পোহা
তালিকায় তৃতীয় যে খাবারটি নিঃসন্দেহে জায়গা পাবে তা হলো মুড়ি-মুড়কি ও চিড়ার নানা ভর্তা মিশিয়ে তৈরি একেবারে গ্রামীণ ঘরানার নাস্তা। ধোয়া চিড়া, সরিষার তেল, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, লেবু দিয়ে বানানো ভর্তা এক সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার মধ্যে এক ধরনের পল্লিবন্ধুতা থাকে। এই খাবারের বিশেষত্ব হলো, এটি তৈরি করা সহজ এবং অত্যন্ত সাশ্রয়ী। যারা ঝটপট কিছু খেতে চান তাদের জন্য এটি বর্ষার বিকেলে আদর্শ।
৪. চিকেন কর্ন স্যুপ
চতুর্থ পছন্দ হতে পারে হট ও স্পাইসি স্যুপ। বিশেষ করে চিকেন কর্ন স্যুপ বা হট অ্যান্ড সাওয়ার স্যুপ বর্ষার হালকা ঠান্ডা কাটাতে সাহায্য করে। শুধু তরুণ বা তরুণী নয়, বর্ষাকালের এই স্যুপ শিশু ও বৃদ্ধ সবার জন্য উপযোগী। এতে যেমন প্রোটিন ও মিনারেল থাকে, তেমনি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতেও সহায়তা করে।
৫. চটপটি ও ফুচকা
পঞ্চম খাবারটি হচ্ছে চটপটি ও ফুচকা। যদিও এই খাবার রাস্তায় খাওয়া হয় বেশি, কিন্তু আজকাল ঘরেও সহজ উপায়ে বানানো যায়। চাটপটির টক ঝাল মসলা ও সেদ্ধ মটরের ঘ্রাণ, সঙ্গে ফুচকার খোসা এই দুইয়ের মেলবন্ধন বর্ষাকালীন বিকেলকে করে তোলে স্মরণীয়। বিশেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে এই খাবার খাওয়ার মজাই আলাদা।
৬. আলুর চপ ও ডালপুরি
ষষ্ঠ খাবারটি হচ্ছে আলুর চপ ও ডালপুরি। বৃষ্টিভেজা বিকেলে পেঁয়াজ-মরিচ-মশলা মিশিয়ে তৈরি আলুর চপ কিংবা ডালপুরির স্বাদই আলাদা। এক কাপ চায়ের সঙ্গে এই চপ বা পুরি খাওয়ার আনন্দ অনেকটা যেন শৈশবে ফিরে যাওয়ার মতো। অনেক পরিবারেই বর্ষার ছুটির দিনে এসব খাবার রান্না হয় গল্পের ছলে।
৭. জিলাপি কিংবা রসমালাই
সপ্তম খাবারটি হচ্ছে জিলাপি কিংবা রসমালাই। বর্ষার দিনে শুধুই ঝাল নয়, একটুখানি মিষ্টির ছোঁয়া থাকলেও মন্দ হয় না। গরম জিলাপি কিংবা ঠান্ডা রসগোল্লা যেকোনো একটি বৃষ্টিভেজা বিকেলকে করে তোলে সম্পূর্ণ। ঝুম বৃষ্টির মাঝে জানালার পাশে বসে চায়ের সঙ্গে এক টুকরো জিলাপি চিবিয়ে খাওয়ার অনুভূতি একেবারে ক্লাসিক।
সব মিলিয়ে বর্ষার বিকেলে একটু ভিন্ন রকম খাওয়া দাওয়ার মাঝে লুকিয়ে থাকে বিশেষ এক অনুভব। কখনো হয় সেটা মায়ের হাতের খিচুড়ি, কখনো বন্ধুর হাতে বানানো পাকোড়া, কখনো আবার স্রেফ নিজের হাতের তৈরি চিড়াভর্তা। খাবারের মাঝেই যেন বৃষ্টির দিনে পাওয়া যায় শান্তির ছোঁয়া। তাই বর্ষাকালে শুধু বৃষ্টির সৌন্দর্য নয়, বরং সেই সঙ্গে খাবারের প্লেটেও আসুক কিছু মুখরোচক স্বাদের ছোঁয়া।
বিষয়: #খাবার #দিনের #বর্ষার #মুখরোচক