শুক্রবার ● ৫ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » সাহিত্য ডাইরি » “স্যার ৩৩৩/৯৯৯ নাম্বারে বিনা রিচার্জে কল করা যাবে”
“স্যার ৩৩৩/৯৯৯ নাম্বারে বিনা রিচার্জে কল করা যাবে”

ছাত্রীকে পড়ানোর পঞ্চম দিনে সে আমাকে বইয়ের লাষ্ট পেজ দেখিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো
“স্যার ৩৩৩/৯৯৯ নাম্বারে বিনা রিচার্জে কল করা যাবে”
আমি বুঝে গিয়েছিলাম সে আমাকেই ওয়ার্নিং দিয়ে দিয়েছে কৌশলে, যাতে তার সাথে ভুল কিছু করার চেষ্টা না করি।আমি যখন পড়াতাম তখন আন্টি আংকেল অফিসে থাকতো।খালি বাসা আমি আর ছাত্রী একা আশেপাশে লোকজন ও তেমন ছিলো না।আমি নিজের উপর বিশ্বাস করলে ও ছাত্রীর তো আর আমার উপরে বিশ্বাস নেই।
আমি আমি পড়াশোনা শেষ করে চাকরির চেষ্টা করছি। অনেক জায়গা ইন্টারভিউ দিয়েছি সব লোক দেখানো কিন্তু আমাদের মতো লোকদের কি আর বিনা মূল্যে চাকরি দেওয়া হয়।হাল ছেড়ে দিয়ে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করলাম সাথে নানা স্কুল কলেজে চাকরির চেষ্টা করলাম।
মামার সাথে জব করতো ছাত্রীর বাবা তিনি মেয়ের জন্য ভালো স্যার খুঁজছে মামা আমার কথা বললেন আমাকে ছাত্রীর ক্লাস সিক্সের ফটো আর ক্লাস ফাইবের বৃত্তির পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে আমি রাজি হয়ে গেলাম স্টুডেন্ট ভালো পড়াতে তেমন কষ্ট হবে না তা ভেবে।সব ঠিকঠাক করার জন্য তাদের বাসায় গেলাম।দেখি মেয়ে যতেষ্ট বড় ক্লাস নাইনে পড়ে আমি ভেবেছিলাম ছোট হবে।
সেদিন থেকে পড়ানো শুরু করলাম।পড়া বুঝানোর সময় আমি তার দিকে তাকিয়ে কথা বললে ও সে কখনো আমার দিকে তাকাতে না, বইয়ের দিকে তাকিয়ে বুঝতো কথা ও তেমন বলতো না জিজ্ঞেস করলে মাথা নাড়তো।অন্য সব স্টুডেন্টকে অংক বুঝাতে গিয়ে আমিই ভুলে যেতাম কি বলছি কিন্তু সে একবারই বুঝে যেত আমার প্রথমে মনে হতো মিথ্যা বলছে কিছু বুঝেনি।আমরা এক সময় স্যাররা বুঝেছ বললেই বলতাম জ্বি স্যার, যখন স্যার বলতো কি বুঝেছ আমাকে বুঝাও তখন সবার অবস্থা বারোটা। তাই আমিও ওকে জিজ্ঞেস করতাম বলো সে আমাকে বুঝিয়ে দিতো।
মাঝে মাঝে what’s app এ কথা হতো তাও ওকে গ্রামারসের রুলস পাঠানোর কথা মনে করিয়ে দিতো আমি পাঠিয়ে দিতাম এইটুকু।আমি নিজ থেকে কি করছো? নাস্তা করেছ?ইত্যাদি জিজ্ঞেস করলে পড়ছি,হ্যা এর বাহিরে আমি কি করছি এটা জিজ্ঞেস করতো না হয়তো ভয়ে স্যার কি মনে করবে এসব ভেবে।এভাবে কথা বলতে বলতে এক একদিন আমাদের ফ্রেন্ডশীপ হয়ে যায় আমি ওকে আমার লাভ স্টোরি বলবো বলেছিলাম।পরের দিন পড়াতে গিয়ে দেখি এমন ভাব করছে যেন আমি শুধু ওর স্যার এর বাহিরে কিছু নেই।পড়া শেষ করে আমি চলে যাওয়ার জন্য উঠলাম সে বলল
“আপনার লাভ স্টোরি বলার কথা ছিলো চলে যাচ্ছেন কেন?আমার না লাভ স্টোরি শুনতে ভালো লাগে বলেন প্লিজ ”
আমি পুরো হতভম্ব ভেবেছি সব ভুলে গেছে কিন্তু এটা কি ছিলো সত্যি মেয়েরা বড় অদ্ভুত। তারপর বলতে শুরু করলাম সে খুব মন দিয়ে শুনলো আমার জন্য আপসোস করলো।এরপর থেকে আমরা পুরোপুরি বন্ধুর মতো হয়ে গেলাম সে ও তার সব কথা আমাকে বলা শুরু করলো।আমি যে মেয়েকে সাদাসিধে মনে করতাম সে রিলেশন করে আর আমার দিকে না তাকানোর কারণ তার বফ এর বারণ ছিলো,আর আমাকে নিজ থেকে কিছু জিজ্ঞেস না করার কারণ এতে নাকি মেয়েদের নিজেকে ছোট মনে হয়।এসব জানার পর আমি হাসবো না কান্না করবো বুঝতেই পারছি না এই বয়সে এতটা পজেসিভ কিভাবে হয়। আমি তাকে বলতাম প্রেম করছো ভালো কিন্তু এসব নিয়ে কোনদিন বেশি সিরিয়াস হবে না কোন ফায়দা নেই।জানি না আমার কথা কানে নিয়েছিলো কি না।
স্টুডেন্টের সাথে শিক্ষকের প্রেম বিয়ে এসব অনেক শুনেছি সব সময় এর বিরুদ্ধে ও ছিলাম।অন্য সব স্টুডেন্টের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো পড়া নিয়ে কিন্তু কিভাবে ওর সাথে এতটা ফ্রি হয়ে গেলাম জানি না।ওকে পছন্দ করার কারণ ওর ব্রিলিয়েন্ট মাথা ছিলো নাকি অন্যকিছু তাও জানি না। পড়া সময় মতো দেওয়ার জন্য মাঝে মধ্যে তার প্রিয় আইসক্রিম খাওয়াতাম,চেলেন্জ করে নুডলস, ডিম বাজি করিয়ে আমাকে খাওয়াতে বলতাম।সেসব ছবি তুলে রাখতাম লাভ সেফ দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিতাম।কিন্তু সে বুঝেও না বুঝার ভান করতো।
আমাকে জানিয়েছে তার আগের ২টা বফ আর বর্তমান সহ ৩টা রিলেশন, কথায় কথায় আমি বলে ছিলাম আমিসহ চারটা হবে।কিছু সময় আমার দিকে ভ্রু বাঁকিয়ে তাকিয়ে ছিলো আবার স্বাভাবিকভাবে কথা বলা শুরু করলো।এতে বুঝে গেলাম আমি যাই করি না কেন পাত্তা দিবে না এর চেয়ে ফ্রেন্ড হয়ে থাকা ভালো।মাঝে মধ্যে ওকে পড়ানোর সময় আংকেল বাসায় থাকতো তখন ও মজার কিছু দেখলে বা এমন কিছু যা ওনার সামনে বলা যাবে না সে সব লিখে জিজ্ঞেস করতো। আমিও লিখে বলে দিতাম বিষয়টা প্রেমিক প্রেমিকার লুকোচুরির মতো মনে হতো।
ওর এক্সামের সময় পড়া বাদ দিয়ে দেই এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। এখন একটা পাবলিক কলেজে জব করি। যখনই বই হাতে নেই লাষ্ট পেজের সেই নাম্বার গুলো দেখলেই ওর কথা মনে পড়ে হটাৎ একদিন
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বিষয়: #করা #কল #ছোট্টো #নাম্বার #বিনা #রিচার্জ #লেখক - (ছোট্টো লেখক) #স্যার




ছড়াকার মিলু কাসেম: সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতির উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের বিদায়
বিশ্বনাথে সাহিত্যচর্চা ও সমাজসেবায় অনন্য মিজানুর রহমান মিজান!
ড. মুমিনুল হক একাডেমির নতুন কমিটির আত্বপ্রকাশ।
‘অঞ্জলি লহ মোর’ ম্যুরাল ভাঙচুর, ১২০ জনের প্রতিবাদ
এক্সিবিশন এবং বই প্রকাশনীর মাধ্যমে শেষ হচ্ছে “গঙ্গাবুড়ি-রিভার হেরিটেজ প্রকল্প” চলবে ২৫ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত
বাংলার শব্দচাষী’র আয়োজনে মহান স্বাধীনতা দিবস ও ঈদ সংখ্যা ২০২৫ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও সাহিত্য আড্ডা
সময় আমাদের শিখিয়ে দেয়, কল্পনার চেয়ে বাস্তবতা কত কঠিন
প্রেম করেছো নিজের ইচ্ছায়
সে ফিরে আসবেই
একুশে বইমেলায় মোংলা সাহিত্য পরিষদের যৌথ কাব্যগ্রন্থ ‘বিষন্ন মেঘ’
