

বুধবার ● ২৩ জুলাই ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ছাতকে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায় ফেঁসে গেলেন প্রবাসী বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন
ছাতকে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায় ফেঁসে গেলেন প্রবাসী বিএনপি নেতা তাজ উদ্দিন
ছাতক(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার জোরপুর্বক ধর্ষণ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন চিহ্নিত নারীলোভী মোহাম্মদ তোয়াহিদ সারওয়ার ওরফে তাজ উদ্দিন। যিনি নিজেকে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র প্রচার সেলের নেতা বলে দাবী করে আসছে।
সুন্দরী এক যুবতীকে শ্লীলতাহানীর ঘটনায় যুক্তরাজ্য বিএনপি’র নেতা ফেঁসে গেছেন ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলায়।তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়।
এ মামলা প্রত্যাহার না করলে সহপরিবার হত্যা করার হুমকি দিয়েছে বিএনপির নেতা তাজ উদ্দিন। এঘটনায় পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মামলা বাদী। মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন পুলিশকে ম্যানেজ করে লন্ডনের বিএনপির নেতার দাপট দেখানো হচ্ছে।
গত ১১ জুলাই ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামে এ অমানবিক ঘটনা ঘটে। এ অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় নিযাতিতা ছোট ভাই ইমন মিয়া বাদী হয়ে গত ১৪ জুলাই সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের বাসিন্দা দরিদ্র কৃষক দুলু মিয়ার তরুণী কন্যা জাউয়াবাজার ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
দেশে আসলে কলেজে যাওয়া-আসার পথে দুলু মিয়ার মেয়েকে সব সময় উত্যক্ত করতেন যুক্তরাজ্য বিএনপি’র প্রচার সেলের স্বঘোষিত নেতা, স্থানীয় ভাবে অর্থ-বিত্তে প্রভাবশালী, গহরপুর গ্রামের মৃত রইছ উল্লার ছেলে, এলাকা চিহ্নিত নারী লোভী, যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাম্মদ তোয়াহিদ সারওয়ার ওরফে তাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়েছে। নারী কেলেংকারির ঘটনায় জেলাজুড়েই ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
সেই মোহাম্মদ তোয়াহিদ সারওয়ার ওরফে তাজ উদ্দিন কৃষক দুলু মিয়ার তরুণী মেয়েকে প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দেন। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পর তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়।
এরপরে দিনের পর দিন কলেজে যাওয়া-আসার পথে শুরু হয় নানা প্রকারের অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গী। কিন্তু কিছুতেই কৃষক কন্যা রাজি না হওয়ায় শুরু হয় প্রত্যাখ্যাতের প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ।
গত ১১ জুলাই বাড়ির নিত্যপণ্য আনার জন্য ভিকটিমের ছোট ভাই ইমন মিয়া স্থানীয় বাজারে চলে যায়। আর কৃষক দুলু মিয়া ও তাঁর স্ত্রী তরুণী মেয়েকে বাড়িতে রেখে জরুরী প্রয়োজনে পাশের বাড়ি যান।
লম্পট তাজউদ্দিন সন্ধ্যে সাড়ে ৭টায় খালি বাড়িতে দুলু মিয়ার বসত ঘরে ঢুকে তার তরুণী মেয়েকে একা পেয়ে অতর্কিতে ঝাঁপটে ধরে। মুখ চেপে রেখে ধর্ষক তাজ উদ্দিন তরুণীর পরণের কাপড়-চোপড় জোরপূর্বক খুলে নিয়ে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয়। সুযোগে তরুণী মুখের চাপ খুলতে পেরে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে। আকস্মিক মেয়ের চিৎকার শুনে পাশের বাড়ি থেকে ভিকটিমের বাবা-মা এবং পথচারী জনৈক আব্দুল আউয়ালসহ আশেপাশের লোকজন দ্রুত ঘটনাস্থলে দৌড়ে চলে আসে। লোকজন আসতে দেখে ধর্ষক তাজউদ্দিন বাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। বিদ্যুতের আলোয় উপস্থিত সবাই তাকে দেখে চিনতে পারেন।
এ খবর পেয়ে ভিকটিমের ছোট ভাই ইমন মিয়া দ্রুত বাজার থেকে ছুটে আসেন এবং চিকিৎসার উদ্দেশ্যে জখমী বোনকে নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ভিকটিম সেখানে দু’দিন অবস্থান করে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
গত ১২ জুলাই সন্ধ্যায় ভিকটিমের ছোট ভাই ইমন মিয়া ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ছাতক থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ এঘটনায় মামলা না নিয়ে বাদীকে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়া হয়।
এঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার ছোট ভাই ইমন মিয়া বাদী হয়ে বিএনপির নেতা ধর্ষক তাজউদ্দিন ওরফে সারওয়ার আহমদকে আসামী করে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে (নারী ও শিশু দমন মামলা {পিটিশন} নং-১৭৬/২৫)। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। এ মামলা দায়ের পর যুক্তরাজ্য বিএনপি’র নেতার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বার বন্ধ রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে রয়েছে স্থানীয় গহরপুর নিবাসী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জিয়াউর রহমান হত্যা মামলার (সিআর মামলা নং- ৪৮৮/২৪) প্রধান আসামীও উপরোক্ত মোহাম্মদ তোয়াহিদ সারওয়ার ওরফে তাজ উদ্দিন। ১৯৯৪ সালে লন্ডনে এক নাবালক মেয়েকে অপহরণ, ধর্ষণ ও গুমের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে মোহাম্মদ তোয়াহিদ সারওয়ার ওরফে তাজ উদ্দিন ৪ বছর জেল হাজতে ছিলেন । তার একমাত্র পুত্র বাবা অমানবিক অত্যাচার নিযাতনের ঘটনায় ২০১৬ সালে লন্ডনে আত্নহত্যা করেছে। এ আত্নহত্যা করার সময় চিরকুট লেখা কাগজ লন্ডনের পুলিশ উদ্ধার করেছে। তার আপন বড় ভাই মৃত নিজাম উদ্দিন লন্ডনে কোটি কোটি টাকা আত্নসাত ও দেশের বাড়ি ঘর জোরপুবক দখলের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। এছাড়াও মোহাম্মদ তোয়াহিদ সারওয়ার ওরফে তাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে অনেক কুকীর্তি ও মামলার ঘটনা রয়েছে। এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তার বড় ভাইয়ের নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী নাজমা বেগম।
এব্যাপারে তাজ উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে ও তার মোবাইল নম্বার বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে ওসি মুখলেছুর রহমান আকন্দ এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,কলেজ ছাত্রী নিযাতনের ঘটনার মামলাটি আদালত থেকে
সিলেটের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কাছে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বিষয়: #ছাতক #ধর্ষণ #নারী #নির্যাতন #মামলা