

মঙ্গলবার ● ৩ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » লাইফস্টাইল » ঈদের দিন যদি বৃষ্টি হয়! কোরবানির প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
ঈদের দিন যদি বৃষ্টি হয়! কোরবানির প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
বজ্রকণ্ঠ ডেস্ক::
ঈদ মানেই খুশির ঝলক, সকাল বেলাটা শুরু হয় তাকবিরের গুঞ্জনে, পবিত্র ঈদের নামাজে আত্মনিয়োগে আর ঘরে ঘরে কোরবানির প্রস্তুতির ব্যস্ততায়। তবে এই আনন্দঘন দিনে যদি আকাশ ভরে ওঠে কালো মেঘে, আর নেমে আসে বৃষ্টি তাহলে কোরবানির প্রস্তুতিতে দেখা দেয় ভিন্ন এক চ্যালেঞ্জ। রাস্তায় ও উঠোনে কাদাপানি আর প্রস্তুতির পরিকল্পনায় নেমে আসে এক অনিশ্চয়তা। তবে একটু পরিকল্পনা ও সচেতনতার মাধ্যমে কোরবানির কাজ সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।
গত কয়েকদিন থেকে মনে হচ্ছে যেন বর্ষাকাল এবছর জলদি চলে এসেছে। এদিকে আবহাওয়া অফিসও বলছে ঈদের দিন বৃষ্টি হতে পারে।
তাহলে চলুন জেনে নিই, ঈদের দিনে বৃষ্টি হলে কোরবানির প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে, যাতে আনন্দ ও দায়িত্ব উভয়ই বজায় থাকে নিখুঁতভাবে-
১. অস্থায়ী ছাউনি তৈরি
ঈদের দিন যদি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে কোরবানির জায়গা সুরক্ষিত রাখতে অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। ত্রিপল, পলিথিন বা ক্যানভাস দিয়ে ছাউনি তৈরি করে রাখলে পশু জবাই ও কাটাকাটির কাজ বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে। ছাউনির নিচে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে এতে গরম কম লাগবে এবং কাজ করতেও স্বস্তি মিলবে। ছাউনি তৈরির সময় খেয়াল রাখুন যেন তা পানিতে ভেঙে না পড়ে এবং জায়গাটির চারপাশ শুকনো থাকে।
২. কোরবানির জন্য উঁচু ও নিরাপদ স্থান বাছাই
বৃষ্টির দিনে নিচু জায়গায় কোরবানি দিলে পানি জমে গিয়ে রক্ত, বর্জ্য ও কাদা মিশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হতে পারে। তাই কোরবানির জন্য এমন জায়গা নির্বাচন করতে হবে যা স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু এবং যেখানে পানি সহজে বেরিয়ে যেতে পারে।
যদি সম্ভব হয়, তাহলে কয়েকটি ইট বা বাঁশ দিয়ে সাময়িক একটি মাচা তৈরি করতে পারেন, যাতে কাজের সময় নিচে পানি জমে না থাকে।
৩. সঠিক ড্রেনেজ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা
বৃষ্টি হলে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় নিচু জায়গায় পানি জমে থাকা। এতে কোরবানির সময় পশুর রক্ত ও বর্জ্য যদি জমা পানির সঙ্গে মিশে যায়, তাহলে চারপাশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশও মারাত্মকভাবে দূষিত হবে। তাই আগে থেকেই বাড়ির ড্রেনেজ ব্যবস্থা মেরামত করে নিতে হবে। যাতে সহজেই পানি নিষ্কাশন হয়।
৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ খেয়াল
বৃষ্টির দিন মানেই কাদা, পিচ্ছিল মাটি ও ভেজা পরিবেশ। এ সময় যাতে কোরবানির মাংস ময়লা মাটিতে না পড়ে তাই সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। তাই মাংস কাটার স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করে পলিথিন বা স্যাঁতসেঁতে নিরোধক চাদর বিছিয়ে নিন।
ঈদের দিন যদি বৃষ্টি হয়! কোরবানির প্রস্তুতি নিবেন যেভাবে
একই সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি, সাবান, হ্যান্ড গ্লাভস ও জীবাণুনাশক হাতের কাছেই রাখতে হবে। যারা মাংস কাটাকাটি ও ভুঁড়ি পরিষ্কারের কাজ করবেন, তারা যেন ভেজা জামাকাপড়ে না থাকেন এবং প্রয়োজনে রেইনকোট ব্যবহার করেন।
৫. ইনডোর প্রস্তুতির পরিকল্পনা
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যদি প্রবল বর্ষণের আশঙ্কা থাকে, তাহলে আগে থেকেই বাড়ির ভেতরে প্রস্তুতির কথাও মাথায় রাখতে হবে। গ্যারেজ, খোলা বারান্দা, ছাদ এবং বড় কোনো ঘরকে সাময়িকভাবে প্রস্তুত করে সেখানেই কোরবানির কাজ করতে হবে।
তবে ঘরের ভেতরে কোরবানির সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত জায়গা ও আলো-বায়ু চলাচলের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। না হলে পুরো জায়গায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়বে।
৬. দলবদ্ধ সহযোগিতায় কাজ ভাগ করে নেওয়া
বৃষ্টির দিনে কোরবানির কাজ একা বা স্বল্পসংখ্যক লোক দিয়ে সম্পন্ন করা মোটেও সহজ নয়। তাই দ্রুত সময়ে কাজ শেষ করতে আগে থেকেই একটি দল গঠন করতে হবে- যেখানে কেউ কাটাকাটির দায়িত্বে থাকবে, কেউ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার, আবার কেউ মাংস বণ্টনের দায়িত্বে থাকবে।
দলগতভাবে কাজ করলে সময় কম লাগে এবং পরিবেশও থাকে নিয়ন্ত্রণে। এ সময়ে পারস্পরিক সহযোগিতাই তুলে আনে ঈদের প্রকৃত আনন্দ।
৭. মাংস সংরক্ষণের জন্য শুকনো ও নিরাপদ জায়গা নির্বাচন
বৃষ্টির সময় চারপাশে পরিবেশ ভেজা থাকায় মাংস দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই মাংস কাটার পর যত দ্রুত সম্ভব তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য মাংস শুকনো কাপড়ে ভালোভাবে মোড়ানো ব্যাগে রাখতে হবে এবং ফ্রিজে বা কুলারে সংরক্ষণ করতে হবে।
একই সঙ্গে মাংস বণ্টনের দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। মাংস বণ্টনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিন বয়স্ক, প্রতিবেশী ও অসহায়-গরিবদের, যেন তারা সময়মতো তা রান্না ও সংরক্ষণ করতে পারেন। ফলে মাংস নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না।
বিষয়: #ঈদের #কোরবানির #দিন #নেবেন #প্রস্তুতি #বৃষ্টি #যদি #যেভাবে #হয়