শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বজ্রকণ্ঠ "সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা", সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ঢাকা,রাজশাহী,নিউ ইয়র্ক,লন্ডন থেকে প্রকাশিত। লিখতে পারেন আপনিও। বজ্রকণ্ঠ:” সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা ” আপনাকে স্বাগতম। বজ্রকণ্ঠ:: জ্ঞানের ঘর:: সংবাদপত্র কে বলা হয় জ্ঞানের ঘর। প্রিয় পাঠক, আপনিও ” বজ্রকণ্ঠ ” অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ” বজ্রকণ্ঠ:” সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা ” কে জানাতে ই-মেইল করুন-ই-মেইল:: [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

Bojrokontho
শুক্রবার ● ১১ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » ধর্ম » আল্লাহর নবি আইয়ুব (আ.) ও শীতল পানির ঝরনা
প্রথম পাতা » ধর্ম » আল্লাহর নবি আইয়ুব (আ.) ও শীতল পানির ঝরনা
১৪৬ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১১ এপ্রিল ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আল্লাহর নবি আইয়ুব (আ.) ও শীতল পানির ঝরনা

ওমর ফারুক ফেরদৌস::
আল্লাহর নবি আইয়ুব (আ.) ও শীতল পানির ঝরনা

আল্লাহ নবি আইয়ুব (আ.) ছিলেন হজরত ইবরাহিমের (আ.) ছেলে হজরত ইসহাকের (আ.) বংশধর। কোরআনের প্রখ্যাত ব্যাখ্যাকার ও ঐতিহাসিক ইবনে কাসিরের (রহ.) বর্ণনা অনুযায়ী তিনি ছিলেন নবি ইসহাকের (আ.) ছেলে নবি ইয়াকুবের জমজ ভাই ঈছের প্রপৌত্র। আর তার স্ত্রী ছিলেন নবি ইয়াকুবের (আ.) ছেলে নবি ইউসুফের (আ.) পৌত্রী ‘লাইয়া’ বিনতে ইফরাঈম ইবনে ইউসুফ।

অধিকাংশ বর্ণনা অনুযায়ী তিনি নবি হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন হজরত ইউসুফ (আ.) ও হজরত মুসার (আ.) মাঝামাঝি সময়ে।

আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে জীবনের প্রথম দিকে আইয়ুব (আ.) ছিলেন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে পরিপূর্ণ একজন মানুষ। তারপর জীবনের এক পর্যায়ে আল্লাহ তাআলা তাকে পরীক্ষায় ফেলেন। তিনি তার ধন-সম্পদ হারান, সন্তানদের হারান এবং গুরুতর অসুস্থতায় আক্রান্ত হন। কিন্তু তিনি আল্লাহ তাআলার রহমতের আশা, আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা ও ধৈর্য হারাননি। তাই আল্লাহ তাআলা তার ওপর সন্তুষ্ট হন এবং আবার তাকে সুস্থতা, পরিবার ও সম্পদ দান করেন।

পবিত্র কোরআনে সুরা আম্বিয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, স্মরণ করুন আইয়ুবের কথা, যখন তিনি তার পালনকর্তাকে ডেকে বলেছিলেন, আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিলাম। আর তার যত দুঃখ-কষ্ট ছিল তা দূর করে দিলাম এবং তার পরিবার-পরিজন তাকে দিয়ে দিলাম। আর তাদের সাথে তাদের মত আরো দিলাম আমার পক্ষ থেকে রহমত এবং ইবাদাতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ। (সুরা আম্বিয়া: ৮৩, ৮৪)

সুরা সোয়াদে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর স্মরণ কর আমার বান্দা আইয়ুবকে, যখন সে তার রবকে ডেকে বলেছিল, শয়তান তো আমাকে কষ্ট ও আজাবে ফেলেছে। (অর্থাৎ আমার ধৈর্যচ্যুতি ঘটিয়ে আমাকে আল্লাহর অকৃতজ্ঞ বান্দা বানানোর জন্য কুমন্ত্রণা দিয়ে চলেছে) (আমি বললাম), তুমি তোমার পা দিয়ে ভূমিতে আঘাত কর, এ হচ্ছে গোসলের সুশীতল পানি আর পানীয়। আর আমার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ ও বুদ্ধিমানদের জন্য উপদেশস্বরূপ আমি তাকে দান করলাম তার পরিবার-পরিজন ও তাদের সাথে তাদের অনুরূপ অনেককে। (সুরা সোয়াদ: ৪১-৪৩)

এ আয়াতগুলো থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ তাআলা যখন তার নবি আইয়ুবকে পরীক্ষায় ফেলেন, তার ধন-সম্পদ, সন্তান সবই তার কাছ থেকে কেড়ে নেন এবং তাকে অসুস্থতায় ফেলেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে এ অবস্থা থেকে মুক্তি চেয়ে দোয়া করেছিলেন তার রহমত প্রার্থনা করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা তার দোয়া কবুল করেন, তাকে আদেশ দেন, তিনি যেন তার পা দিয়ে মাটিতে আঘাত করেন। তিনি তা করতেই একটি ঠান্ডা জলের ঝরনা সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা তাকে ওই পানি দিয়ে গোসল করার ও ওই পানি পান করার নির্দেশ দেন এবং তাকে পূর্ণ সুস্থতা দান করেন। তাকে আবার পরিবার দান করেন এবং আগের চেয়ে অনেক বেশি সম্পদ তাকে দান করেন।

আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহর নবি আইয়ুব (আ.) ১৮ বছর রোগ-ব্যাধিতে ভুগেছিলেন। এ সময় তার আত্মীয়-স্বজনসহ সবাই তাঁকে পরিত্যাগ করেছিল, শুধু দুই জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া। তারা প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় তার খোঁজ নিতে আসত। একদিন তাদের একজন অন্যজনকে বলল, তুমি জানো, আল্লাহর কসম! আইয়ুব অবশ্যই এমন কোনো পাপ করেছেন, যা দুনিয়ার আর কেউ করেনি। অপরজন জিজ্ঞাসা করল, তুমি কেন এমন বলছ? সে বলল, দেখো, ১৮ বছর ধরে আল্লাহ তাঁর প্রতি করুণা করেননি, রোগ দূর করেননি।

পরে তারা যখন আইয়ুবের (আ.) কাছে গেল, তখন এক বন্ধু তা বলেই ফেলল। তখন আইয়ুব (আ.) বললেন, তুমি কী বলছ, আমি জানি না। তবে আল্লাহ জানেন, আমি যখন দুই ব্যক্তিকে আল্লাহর নামে শপথ করে ঝগড়া করতে দেখতাম, তখন আমি ঘরে ফিরে তাদের পক্ষ থেকে কাফফারা দিতাম—এই ভয়ে যে, তারা আল্লাহর নাম সত্য ছাড়া অন্য কোনো ক্ষেত্রে নিয়েছে কি না। (অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন, তিনি সব সময় আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন এবং তিনি কোনো বড় পাপ করেছেন বলে তারা যে ধারণা করছে তা সত্য নয়।)

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, আইয়ুব (আ.) প্রয়োজন পূরণের জন্য বাইরে যেতেন। প্রয়োজন পূরণ শেষে তার স্ত্রী তার হাত ধরে তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনতেন। একদিন তিনি দেরি করলেন। আল্লাহ তাআলা তার কাছে ওহি পাঠালেন, আপনার পা দিয়ে মাটিতে আঘাত করুন, এই পানি দিয়ে গোসল করুন ও তা পান করুন।

স্ত্রী তার দেরি দেখে খুঁজতে বের হলেন। তিনি যখন ফিরে এলেন, তখন আল্লাহ তাআলা তার সমস্ত কষ্ট দূর করে দিয়েছেন এবং তিনি আগের চেয়েও সুন্দর ও সুস্থ হয়ে গেছেন। স্ত্রী তাকে দেখে বললেন, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন! আপনি কী ওই নবিকে দেখেছেন, যিনি এত দিন রোগে ভুগছিলেন? আল্লাহর কসম, সুস্থ অবস্থায় তিনি আপনার মতোই ছিলেন। তখন আইয়ুব (আ.) বললেন, আমিই সেই নবি।

তার ছিল দুটি গুদামঘর—একটি গমের জন্য, একটি যবের জন্য। আল্লাহ তাআলা দুটি মেঘ পাঠালেন। একটি গমের গুদামের উপর বর্ষিত হয়ে সেটিকে স্বর্ণে পরিপূর্ণ করে দিলো, আর অন্যটি যবের গুদামের উপর বর্ষিত হয়ে সেটিকেও পূর্ণ করে দিলো। (মুসনাদে বাযযার)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, আইয়ুব (আ.) নগ্ন অবস্থায় গোসল করছিলেন, তখন স্বর্ণের একটি পোকা তার সামনে পড়লো। তিনি পোকাটি কাপড়ে তুলে নিলেন। আল্লাহ তাআলা বললেন, হে আইয়ুব! আমি কি তোমাকে এর চেয়েও বেশি দান করিনি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, হে আমার রব, কিন্তু আমি আপনার কোনো বরকত থেকেই মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারি না। (সহিহ বুখারি)

হজরত আইয়ুবের (আ.) ঘটনা থেকে আমরা ভালো ও খারাপ সব অবস্থায় আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখার শিক্ষা পাই। আর শিক্ষা পাই বিপদে আপদে ধৈর্য ধারণের। আইয়ুব (আ.) নিজের সম্পদ, সন্তান, সুস্থতা সব হারিয়েও আল্লাহর রহমতের আশা ছেড়ে দেননি। ধৈর্য হারাননি। এর প্রতিদানও তিনি পেয়েছেন আল্লাহর তাআলার কাছে।

নবিজি (সা.) বলেন, জেনে রাখো, আপনারা যা অপছন্দ করেন, তাতে ধৈর্য ধারণ করায় রয়েছে অনেক কল্যাণ। আর নিশ্চয়ই সাহায্য ধৈর্যের সঙ্গে, কষ্টের সঙ্গে আসে স্বস্তি, এবং কঠিন সময়ের সঙ্গেই রয়েছে সহজতা। (মুসনাদে আহমদ)



বিষয়: #  #  #  #  #  #


আর্কাইভ

সিলেট শহরের সকল হবিগঞ্জী --- --- --- --- --- --- ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
গ্রেফতার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে
শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করল প্রসিকিউশন
নির্বাচন বানচাল ও অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতেই টার্গেট কিলিং হচ্ছে: নাহিদ
মানবাধীকার অপরাধ মামলা
ওসমান হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজন ফয়সালের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ
শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে লিগ্যাল নোটিশ
‘হাদির সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণায় ছিলেন গুলি করা দুই সন্দেহভাজন’
হাদির হামলাকারীদের ধরিয়ে দিলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ওসমান হাদির অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক: মেডিকেল বোর্ড
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী সন্দেভাজন ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য প্রদানের অনুরোধ