বুধবার ● ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » সুনামগঞ্জ » ছাতকে পল্লী বিদ্যুতের ‘গড়-বিলের কারসাজি’—গ্রাহকরা জিম্মি দুর্নীতির দৌরাত্ম্যে!
ছাতকে পল্লী বিদ্যুতের ‘গড়-বিলের কারসাজি’—গ্রাহকরা জিম্মি দুর্নীতির দৌরাত্ম্যে!
ছাতক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
![]()
সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ছাতক আঞ্চলিক অফিসে চলছে অভিযোগের পাহাড়—অব্যাহত অনিয়ম, ডিমান্ডের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়, বিল–মিটার মিলছে না, মাসের পর মাস মিটার না পাওয়া, আর লোডশেডিংয়ের অজুহাতে দিনভর ভোগান্তি। ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের দাবি—“আমরা বিদ্যুতের গ্রাহক, কিন্তু এখানকার দুর্নীতি আমাদের জিম্মি বানিয়েছে।”
ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ, ট্রাফিক পয়েন্ট, বাজার ও আশপাশ এলাকায় কথা বললে একই অভিযোগ—মিটারে ইউনিট কম, বিলে দেখানো হচ্ছে বেশি। শীত মৌসুমে বিদ্যুৎ থাকার কথা থাকলেও ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। পুরাতন লাইন মেরামত, গাছ কাটার অজুহাতে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
লোড বাড়ানোর নামে ‘ডিমান্ড’—তারপর নেই কোনো কাজ এলাকার ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের অভিযোগ—লোড বাড়ানোর নামে পল্লী বিদ্যুৎ বিপুল অঙ্কের ডিমান্ড নিচ্ছে, কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও সুরাহা মিলছে না।
গোবিন্দগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকার আনোয়ারা মার্কেটের মালিক আশিকুর রহমান জানান,
২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল তিনি ৭৫ কেএ ট্রান্সফরমারের জন্য ২০ হাজার টাকা ডিপোজিট দেন। কিন্তু ডিপোজিট নেওয়ার পর তাকে দেওয়া হয় মাত্র ৩০ কিলো কেএ ট্রান্সফরমার। তারপর কাগজপত্র নিয়ে ছুটেছেন বছর বছর—কিন্তু সমাধান নেই। চার বছর আট মাস ঘুরে তিনি ক্লান্ত, কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাড়া নেই বললেই চলে।
আশিকুর রহমানের অভিযোগ—তার মার্কেটের ডিসেম্বর মাসের বিলে দেখা গেছে ১হাজার ৬২ ইউনিটের গড়-বিল। এর আগেও ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর গড় বিল সংশোধনের জন্য তিনি ৪১০ টাকা জমা দেন। অভিযোগ, সংশোধনের টাকা নেওয়া হলেও এখনো সে সমস্যার কোনো সমাধান করেনি পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। মিটার সংযোগেও ভোগান্তি—দেড় শতাধিক আবেদন ঝুলে আছে। কেবল গড়-বিল বা লোড বাড়ানো নয়—নতুন মিটার সংযোগেও চলছে অদ্ভুত স্থবিরতা।
গত জুলাই মাসে উপজেলার ১৮টি নতুন মিটার সংযোগের জন্য ২১ হাজার ১২০ টাকা জমা দেওয়া হয়। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পার হলেও মিটার স্থাপন হয়নি।
গোবিন্দগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আশরাফুর রহমান চৌধুরীর ছেলে সাদীও একই অভিযোগ তুলেছেন। তিনি জানান, গত ১৪ জুলাই নতুন ১০ দোকানের জন্য ১০টি মিটার চেয়ে আবেদন করেন। এ অফিসের অনুমোদনসহ সব কাগজ জমা দেওয়া হলেও আজ পর্যন্ত কোনো সংযোগ পাননি।
এসব নিয়ে সাবেক সভাপতি আশরাফুর রহমান চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“আমাদের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানে দুই শতাধিক বৈধ মিটার রয়েছে। কিন্তু বর্তমান পল্লী বিদ্যুতের এই অনিয়ম, গড়-বিল, ভুয়া হিসাব, লোডশেডিং—সব মিলিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। আগে পিডিবি যখন ছিল, তখন এত ভোগান্তি ছিল না। এখন গ্রাহকরা যেন পুরোপুরি জিম্মি। লোডশেডিং না ‘ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা’? শীত মৌসুমে সাধারণত বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকার কথা। কিন্তু গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় পরিস্থিতি উল্টো।
সকাল-বিকাল মিলিয়ে ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, আবার হঠাৎ এসে চলে যাচ্ছে। এতে ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষার্থী—সবাই দুর্ভোগে। অনেকের অভিযোগ—“লোডশেডিংয়ের অজুহাতে ইচ্ছেমতো বিদ্যুৎ বন্ধ রাখে পল্লী বিদ্যুৎ।
গ্রাহকদের গণঅভিযোগ—দুই শতাধিক স্বাক্ষর জমা ভোগান্তির শেষ নেই দেখে গত ১৭ ডিসেম্বর এলাকার দুই শতাধিক গ্রাহক স্বাক্ষর করে একটি লিখিত অভিযোগ ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-র কাছে জমা দিয়েছেন। এতে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অতিরিক্ত বিল, বিল–মিটার অসামঞ্জস্য, ডিমান্ডের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মিটার সংযোগে বিলম্বসহ একাধিক অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি—দুর্নীতি বন্ধ হোক, স্বচ্ছতা ফিরে আসুন। এলাকাবাসী মনে করেন “বিদ্যুৎ জনগণের অধিকার, কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ এটিকে ভোগান্তির পণ্য বানিয়েছে। গড়-বিলের নামে প্রতারণা, ডিমান্ডের নামে টাকা আদায়—এসব বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সংকট দেখা দেবে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, “যে অফিসে ঘুষ ছাড়া একটি কাজ হয় না—সেখানে কি উন্নয়ন সম্ভব? গ্রাহকরা অসহায়, আর কর্মকর্তারা অপ্রতিরোধ্য। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের প্রত্যাশাগড়-বিলের ছলনা নয়—স্বচ্ছ সেবা চাই।
এব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক পল্লী বিদ্যুৎ ডিজিএম মিজাকে, ই,তুহিন, এ অফিসের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন
এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে প্রয়োজন শুধু নয়—অবশ্যই জরুরি কঠোর ব্যবস্থা হবে।
এব্যাপারে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডিপ্লোমেসি চাকমা অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন—“আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়: #কারসাজি #ছাতক #পল্লী #বিদ্যুত #বিল




সুনামগঞ্জে হাওর নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন’র কমিটি গঠিত : সভাপতি মিজান-সম্পাদক দেলোয়ার
সুনামগঞ্জে খাল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে সভা অনুষ্ঠিত
সুনামগঞ্জের ৫ আসনে ৩৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল
একই ফ্লাইটে তারেক রহমানের সঙ্গে দেশে ফিরছেন সুনামগঞ্জের আকিকুর রহমান
সুনামগঞ্জে মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ শ্রমিক-র্কমচারীদেরকে সরকার ঘোষিত মজুরি প্রদানের দাবিতে স্মারকলিপি
সুনামগঞ্জের গৌরারং ইউনিয়নে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা সম্পন্ন করলো পদক্ষেপ
ছাতকে নাশকতার অভিযোগে আ.লীগ–যুবলীগের ৩ নেতা গ্রেপ্তার
সুনামগঞ্জ ২ আসনে শিশির মনিরকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ হলেন বিএনপির দুই এমপি
অপারেশন ডেবিল হান্টে ছাতকে রাজনৈতিক মামলার আসামি গ্রেফতার।।
