

শনিবার ● ২৩ আগস্ট ২০২৫
প্রথম পাতা » বানিয়াচং » হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মাসের ভিতরে ২য় বার ধ্বসে পড়লো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদের ছাঁদ!
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে মাসের ভিতরে ২য় বার ধ্বসে পড়লো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদের ছাঁদ!
আকিকুর রহমান রুমন:
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে চলতি মাসের ভিতরেই ২য় বারের মতো ভেঙে পড়লো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদের ছাঁদ!
ঘটনা দু’টির পর সরজমিনে দেখা যায়,চলতি মাসের গত ৬ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে বৃষ্টির মধ্যে ছাঁদ ঢালাইয়ের কাজ করে যাচ্ছিল মসজিদের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ শ্রমিক।
কিন্তু ছাঁদ ঢালাইয়ের চলমান অবস্থায় হঠাৎ করে ছাঁদের একাংশ ধ্বসে পড়ে এবং এক নির্মাণ শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।
যদিও এই বিষয়টি নিয়ে তখনকার সময়ে প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নিতে যায়নি।
তাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তাদের মতো করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২২ আগস্ট (শুক্রবার)রাত ৮টার দিকে মসজিদের ছাঁদ ঢালাইয়ের পরপরই ২য় বারের মতো ধ্বসে পড়ার ঘটনা ঘটে।
মুহূর্তেই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ ইন্টারনেটে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের অনিয়মের প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
এছাড়াও বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে কর্তৃপক্ষের নজরে আসলেও যার যার জায়গা থেকে এই ঘটনায় দায়সারা বক্তব্য প্রদান করেন।
এদিকে চলতি মাসের মধ্যে দু’বার নির্মাণাধীন ছাদ ধ্বসের ঘটনায় সাধারণ মুসল্লি ও এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
জানা যায়,সারা বাংলাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের কথা রয়েছে।
এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
তবে বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের সামনের পুকুরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজে সময়ক্ষেপণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসএসএল এন্ড আলী(জেভি)।
মসজিদটির কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরে সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার নিপেন বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বারবার কেন ধ্বসে যাচ্ছে এর কারণ আমি বুঝতে পারছি না।
ধ্বসে যাওয়ার ফলে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। আপাতত এর বেশি কিছু বলতে পারছি না বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে সাধারণ মুসল্লি ও এলাকাবাসী জানান,উপজেলার পাশের পুকুরটি ঠিকমতো ভরাট না করেই মসজিদের কাজের শুরুর প্রথম থেকেই নিচে কাদা-পানির মধ্যে দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ চালিয়ে আসছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়াও সাটারিং ফিটিংসহ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে দায়সারাভাবে এত বড় প্রজেক্টের কাজ করা হচ্ছে বলেই বারবার এরকমটা হচ্ছে।
যেহেতু দ্বিতীয়বার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে, তাই আমাদের দাবি ঢাকা থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রকৌশলী দল এসে পরীক্ষা করার আগ পর্যন্ত কাজ যেন বন্ধ থাকে।
নতুবা ভবিষ্যতে নির্মাণের পর আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এছাড়াও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে মসজিদটি নির্মাণের ফলে দুইবার ছাদ ধসে পড়েছে।
দ্রুত বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত করে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
তাদের অভিযোগ, সারা দেশে মসজিদ ইতিমধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হলেও বানিয়াচংয়ের মসজিদ নির্মাণ চলছে ঢিমেতালে।
এ ব্যাপারে কাজের ঠিকাদার আব্দুল হামিদ মিয়ার সাথে বিকাল ৫টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,
তার কোন ধরনের অনিয়ম কিংবা গাফলতি করেন নাই কিন্তু দুই,দুটিবার কেন এমনটা হচ্ছে একমাত্র মহান আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আল-আমিন ঐ ভালো জানেন।
এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি বলতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম সাথী’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,দুই দুইবার ছাঁদ ধ্বসে পড়ার বিষয়টি অবশ্যই উচ্চ পর্যায় থেকে দেখা উচিত।
আমি ডিসি স্যারকে সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনাটি অবগত করেছি।
পরবর্তী নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়: #উপজেলা #ছাঁদ #বানিয়াচং #মডেল #মসজিদ #হবিগঞ্জ