শিরোনাম:
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বজ্রকণ্ঠ "সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা", সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ঢাকা,রাজশাহী,নিউ ইয়র্ক,লন্ডন থেকে প্রকাশিত। লিখতে পারেন আপনিও। বজ্রকণ্ঠ:” সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা ” আপনাকে স্বাগতম। বজ্রকণ্ঠ:: জ্ঞানের ঘর:: সংবাদপত্র কে বলা হয় জ্ঞানের ঘর। প্রিয় পাঠক, আপনিও ” বজ্রকণ্ঠ ” অনলাইনের অংশ হয়ে উঠুন। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ” বজ্রকণ্ঠ:” সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা ” কে জানাতে ই-মেইল করুন-ই-মেইল:: [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

Bojrokontho
শনিবার ● ৯ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » ধর্ম » ইসলামে সুদ হারাম ও সুদ খাওয়া ভয়ংকর শাস্তি!
প্রথম পাতা » ধর্ম » ইসলামে সুদ হারাম ও সুদ খাওয়া ভয়ংকর শাস্তি!
২০৪ বার পঠিত
শনিবার ● ৯ নভেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

ইসলামে সুদ হারাম ও সুদ খাওয়া ভয়ংকর শাস্তি!

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী

ইসলামে সুদ হারাম। সুদের সকল কার্যক্রমও হারাম। সুদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই অভিশপ্ত। সুদ দেওয়া-নেওয়ার সঙ্গে জড়িত সবাইকে নবীজি (স.) অভিশাপ দিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, যে সাক্ষী থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয় সবার প্রতি রাসুলুল্লাহ (স.) লানত করেছেন।’ (তিরমিজি: ১২০৬)
ইসলামে সুদ হারাম ও সুদ খাওয়া ভয়ংকর শাস্তি! - হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী
সুদের বিপরীতে মহান আল্লাহ বেচাকেনাকে হালাল করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয় হালাল করেছেন আর সুদকে হারাম করেছেন।’ (সুরা বাকারা: ২৭৫)

সুদ বর্জনের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বিশ্বাস স্থাপনকারীরা, আল্লাহকে ভয় করো এবং যদি তোমরা মুমিন হও, তাহলে সুদের মধ্যে যা বাকি আছে তা বর্জন করো। কিন্তু যদি তা না করো তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও। যদি তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা করো, তাহলে তোমাদের জন্য তোমাদের মূলধন আছে। তোমরা অত্যাচার করবে না আর তোমরা অত্যাচারিত হবে না।’ (সুরা বাকারা: ২৭৮)

সুদখোর স্বয়ং আল্লাহ ও রাসুলের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা মুমিন হও। যদি তোমরা না করো তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও..।’ (সুরা বাকারা: ২৭৮-২৭৯)

কোরআন-হাদিসে সুদের ক্ষেত্রে যত কঠোর ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে অন্য কোনো গুনাহর ব্যাপারে এমনটি করা হয়নি। বিবাহিত নারী-পুরুষের ব্যভিচার বেশি নিন্দনীয়। এর চেয়েও বেশি নিন্দনীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে ব্যভিচার করা। আর স্বীয় মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া কী পরিমাণ জঘন্য হতে পারে? সুদখোর সম্পর্কে বলা হয়েছে, সে তার মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সমান অপরাধে জড়িত। বর্ণিত আছে, ‘সুদ ৭০ প্রকার পাপের সমষ্টি। তার মাঝে সবচেয়ে নিম্নতম হলো—আপন মায়ের সঙ্গে ব্যভিচার করার সমতুল্য।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ১৫৩৪৫)

‘সুদ থেকে অর্জিত এক দিরহাম পরিমাণ অর্থ (প্রায় ৩০০ টাকা) ইসলামের দৃষ্টিতে ৩৬ বার ব্যভিচার করা অপেক্ষা গুরুতর অপরাধ।’ (মুসনাদে আহমদ: ২১৯৫৭)

সুদকে বলা হয় সাতটি ধ্বংসাত্মক মহাপাপের একটি। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকো। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, সেই সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ কী? তিনি বলেন, আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা; জাদু করা; অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা, যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন; সুদ খাওয়া; এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা; জিহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া; সতী মুমিন নারীদের অপবাদ দেওয়া।’ (বুখারি: ২৭৬৬)

শিরক থেকে বেঁচে থাকলে কি অন্য গুনাহ ক্ষমা হয়?
যে দোয়া ১০ বার পড়লে গুনাহ করার ইচ্ছা জাগবে না
গুনাহ হয়ে গেলে দ্রুত যে আমল করবেন

( সুদ খাওয়ার শাস্তি )

১. সুদ খাওয়ার শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা সুদ খায়, তারা কেয়ামতের দিন দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ওই ব্যক্তি; যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছে, ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদ নেওয়ারই মতো! অথচ আল্লাহ তাআলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। এরপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, আগে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই জাহান্নামে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।’ (সুরা বাকারা: ২৭৫)

২. সুদখোরকে মৃত্যুর পর থেকে কেয়ামত পর্যন্ত বরজখি জীবনে আজাব দেওয়া হবে। তার আজাব হবে-তাকে এমন নদীতে সাঁতার কাটতে হবে, যার পানি হবে রক্তের মতো লাল এবং তাতে তার ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হতে থাকবে। (বুখারি: ১৩৮৬)

৩. রাসুল (স.) বলেছেন, মেরাজের রাতে আমি এমন কিছু লোক দেখতে পেলাম, যাদের পেটগুলো বিশাল ঘরের মতো সামনের দিকে বের হয়ে আছে। তা ছিল অসংখ্য সাপে পরিপূর্ণ। যেগুলো পেটের বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাঈল, এরা কারা? তিনি জবাবে বলেন, এরা সুদখোরের দল। (মুসনাদে আহমদ: ৮৬৪০)

(সুদের নানাবিধ ক্ষতি)

১. সুদ মারাত্মক গুনাহ হওয়ার কারণে এই গুনাহে লিপ্ত থাকলে তাকওয়া বা খোদাভীতি হারিয়ে যায়।

২.সুদ মানুষের আত্মায় শিরকের মতো প্রভাব ফেলে। ‘সুদের পাপে ৭০-এর বেশি দরজা আছে। শিরকের পাপ সুদের মতো।’ (মুসনাদ বাজ্জাজ: ১৯৩৫)

৩. অন্তরে সম্পদের মোহ তৈরি করে। সুদখোর কম সম্পদে সন্তুষ্ট হয় না। সে আল্লাহর বিধানকে সম্মান করে না।

৪. সুদের প্রভাবে মানুষের অন্তরে কৃপণতা সৃষ্টি হয়।

৫. সুদখোর অভিশাপের যোগ্য। তাই সে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে থাকে। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) সুদগ্রহীতা, সুদদাতা, সুদের সাক্ষী, সুদের লেখক, বিয়ে হালালকারী (হিল্লা বিয়ে সম্পাদনকারী) ও যার জন্য হালাল করা হয়েছে, দাগ দানকারী, দাগগ্রহীতা, যারা সদকা দেয় না, তাদের সবার প্রতি অভিশাপ দিয়েছেন। আর তিনি বড় আওয়াজে ক্রন্দন করতে নিষেধ করেন। (মুসনাদে আহমদ: ১৩৬৫)

৬. সুদ অহংকার সৃষ্টির কারণ। ফলে সম্পদ ছাড়া তার সামনে আর কোনো কিছু থাকে না।

৭. সুদপ্রথার কারণে দরিদ্র ব্যক্তি অসহায়ত্ব অনুভব করে আর সে কোনো সহযোগী পায় না। ফলে তার অন্তরে হিংসার বীজ বপন হয়।

৮. সুদের কারণে গরিব মানুষের মধ্যে পাপের প্রবণতা বাড়ে। একসময় পাপ করতে অন্তরে ভয় থাকে না।

৯. সুদের কারণে ধনীদের সম্পদ কষ্টবিহীন উপার্জিত হয়। ফলে সে অলস হয়ে যায়।

১০. হারাম রিজিকের কারণে সুদখোরের দোয়া আল্লাহ কবুল করেন না।

১১. সুদ খেলে অন্তরে কালো দাগ পড়ে যায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘না, বরং তাদের অন্তরে মরিচা লেগেছে তার উপার্জনের কারণে’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১৪)। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই শরীরে একটি মাংসের টুকরা আছে, যদি তা সুস্থ হয়, পুরো শরীর সুস্থ থাকে। আর যখন তা নষ্ট হয়, তখন পুরো শরীর নষ্ট হয়ে যায়। আর তা হলো অন্তর।’ (বুখারি: ৫২)

১২. সুদ খাওয়া পবিত্র বস্তু থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ইহুদিদের অন্যায়ের কারণে আমি তাদের ওপর পবিত্র বস্তু হারাম করেছি, যা তাদের জন্য হালাল ছিল। আর তারা আল্লাহর রাস্তা থেকে অধিক হারে নিষেধ করার কারণে এবং তারা সুদ নেওয়ার কারণে। অথচ তাদের তা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আর তারা মানুষের সম্পদ অবৈধভাবে ভক্ষণ করার কারণে (পবিত্র বস্তু হারাম করেছি)। কাফিরদের জন্য আছে বেদনাদায়ক শাস্তি। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৬০-১৬১)

১৩. সুদ আসমানি শাস্তি অবতরণের কারণ।

১৪. সুদের কারণে কল্যাণের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে একে অন্যকে করজে হাসানা বা নিঃশর্ত ঋণ দেয় না। সুদের জন্য গরিবকে অবকাশ দেওয়া হয় না। আর কোনো বিপদগ্রস্তের প্রতি খেয়াল করা হয় না।

১৫. সুদ সম্পদের বরকত কমায়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘সুদকে আল্লাহ কমিয়ে দেন এবং দানকে বর্ধিত করেন’ (সুরা বাকারা: ২৭৬)। ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘সুদ যদিও বেশি হয়, তবু এর পরিণতি কমতির দিকে।’ (মুসনাদ আহমদ: ৩৭৫৪)

১৬. দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। কেননা ঋণগ্রহীতা পণ্যে সুদের হারও যোগ করে।

১৭. বিশ্বের সব সম্পদ গুটিকয়েক ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত হয়ে যায়।

১৮. মানুষের মজুরি বেড়ে যায় এবং পরিবহন ভাড়া বেড়ে যায়। কেননা যখন সুদ নিয়ে কোনো গাড়ি ক্রয় করে, তখন তারা সুদের মুনাফাও তাতে যোগ করে। (ফিকহুর রিবা, পৃষ্ঠা-২৫)

১৯. সুদ মানুষকে অপব্যয়ের দিকে নিয়ে যায়। যারা সুদ গ্রহণ করে, তাদের ওই টাকা খরচ করতে কোনো দ্বিধা থাকে না।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুদের ভয়ঙ্কর ক্ষতি ও পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক থাকার তাওফিক দান করুন। সুদি অর্থ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।



বিষয়: #  #  #  #


আর্কাইভ

সিলেট শহরের সকল হবিগঞ্জী --- --- --- --- --- --- ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
গ্রেফতার দেখানো হলো সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে
শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করল প্রসিকিউশন
নির্বাচন বানচাল ও অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতেই টার্গেট কিলিং হচ্ছে: নাহিদ
মানবাধীকার অপরাধ মামলা
ওসমান হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজন ফয়সালের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ
শিশু সাজিদের মৃত্যুর ঘটনায় ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে লিগ্যাল নোটিশ
‘হাদির সঙ্গে নির্বাচনি প্রচারণায় ছিলেন গুলি করা দুই সন্দেহভাজন’
হাদির হামলাকারীদের ধরিয়ে দিলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ওসমান হাদির অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক: মেডিকেল বোর্ড
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলাকারী সন্দেভাজন ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য প্রদানের অনুরোধ