

রবিবার ● ৫ অক্টোবর ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশ্ব » নেপালে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৩৬
নেপালে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৩৬
বজ্রকণ্ঠ ::
নেপালে ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় গত ৩৬ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে, বহু সেতু ভেসে গেছে।
রবিবার (৫ অক্টোবর) নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রাজধানী কাঠমান্ডুর আর্মড পুলিশ ফোর্স সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এর মধ্যে কোসি প্রদেশে ৩৬ জন ও মধেশে ৩ জন নিহত হয়েছেন। দেশজুড়ে এখনো ১১ জন নিখোঁজ রয়েছেন এবং ১৩ জন আহত হয়েছেন।
মারা যাওয়া ৩৯ জনের মধ্যে ইলামে ভূমিধসের ঘটনায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, পাঁচজন এখনো নিখোঁজ। উদয়পুরে বন্যা ও ভূমিধসে দুজনের মৃত্যু এবং একজন আহত হয়েছেন। খোতাংয়ে বজ্রপাতে একজন মারা গেছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। ভোজপুরে বজ্রপাতে আরও দুজন আহত হয়েছেন। পঞ্চথরে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।
মধেশে রানিরহাটে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যত্র, বরায় একজন, রাসুয়ায় চারজন এবং কাঠমান্ডুতে নদীতে ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। মাকোয়ানপুরে বজ্রপাতে একজন আহত হয়েছেন।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র বিনোদ ঘিমিরে জানান, শনিবার থেকে বন্যার স্রোতে ১১ জন ভেসে গেছে। তাদের এখনো নিখোঁজ বলা হচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিআরআরএমএ) মুখপাত্র শান্তি মহাত।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ভূমিধস ও বন্যার কারণে বেশ কয়েকটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সড়ক ভেসে গেছে। এতে শত শত যাত্রী আটকা পড়েছেন। কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র রিঞ্জি শেরপা বলেন, দেশীয় ফ্লাইটগুলো মারাত্মকভাবে ব্যাহত হলেও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলছে।
দক্ষিণ-পূর্ব নেপালের কোসি নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। প্রতিবছর এ নদী ভারতের বিহার রাজ্যে ভয়াবহ বন্যার কারণ হয়। সুনসারি জেলার জেলা প্রধান ধর্মেন্দ্র কুমার মিশ্র বলেন, কোসি নদীর প্রবাহ স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। তিনি জানান, কোসি ব্যারেজের সব কটি ৫৬টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত স্বাভাবিক অবস্থায় ১০ থেকে ১২টি গেট খোলা থাকে। ভারী যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ করার প্রস্তুতিও চলছে।
পাহাড়ে ঘেরা রাজধানী কাঠমান্ডুতে একাধিক নদী সড়ক প্লাবিত করেছে। অনেক ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। ফলে মন্দিরে ঘেরা এ শহর সড়কপথে দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
নেপালে প্রতিবছর বর্ষাকালে, অর্থাৎ জুনের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে, ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় শত শত মানুষের মৃত্যু হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত দেশজুড়ে বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তায় সর্বোচ্চ সতর্কতা ও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বিষয়: #নেপাল #বন্যা #মৃত্যু

