শিরোনাম:
●   ভোলায় যৌথ অভিযানে অবৈধ ট্রলিংবোট ও বেহুন্দি জালসহ ৮ জেলে আটক ●   সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পুলিশের বিশেষে অভিযানে গ্রেফতার-১ ●   নোয়াখালীতে মাছ ধরার ট্রলারে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বাবুর্চি দগ্ধ ●   রাণীনগরে বিদ্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ ●   দৌলতপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু ●   উপদেষ্টার বিবৃতির প্রতিবাদ, গণছুটি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণা ●   ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ জনের মৃত্যু ●   জাবির হল থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আটক ●   সংস্কার প্রক্রিয়ায় সাফল্যের উপরেই নির্ভর করবে আগামীর বাংলাদেশ: আলী রীয়াজ ●   অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ স্বাস্থ্যের ঠিকাদার মিঠু গ্রেফতার
ঢাকা, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বজ্রকণ্ঠ "সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা", সিলেট ঢাকা লন্ডন নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত। লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন ই-মেইল: ঠিকানা:- [email protected] অনুগ্রহ করে সংবাদ প্রতিবেদন, ছবি এবং ছোট ভিডিও পাঠান। ভিজিট করুন: www.bojrokontho.com

Bojrokontho
শুক্রবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশেষ » বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৬তম প্রয়াণ দিবস
প্রথম পাতা » বিশেষ » বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৬তম প্রয়াণ দিবস
৯ বার পঠিত
শুক্রবার ● ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৬তম প্রয়াণ দিবস

“একদিন এই পৃথিবীটা বাউলের পৃথিবী হবে”—ভালোবাসা, মানবতা ও গানেই ছিল তাঁর সাধনা

আনোয়ার হো‌সেন র‌নি ::
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৬তম প্রয়াণ দিবস

গত শুত্রুবার ১২ সেপ্টেম্বর, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১৬তম প্রয়াণ দিবস। মহান এই বাউল সাধককে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে দেশজুড়ে ভক্ত, শ্রোতা ও সংস্কৃতিকর্মীরা। শাহ আব্দুল করিম শুধু একজন বাউল শিল্পী ছিলেন না; তিনি ছিলেন মানবতার গান গাওয়া এক মহাজন। তাঁর কণ্ঠে, তাঁর রচনায়, তাঁর জীবনদর্শনে বাউল দর্শনের যে সহজ, স্বচ্ছ, নির্মল রূপ ফুটে উঠেছিল—তা আজও মানুষের হৃদয়ে আলো জ্বালায়।

তিনি একবার বলেছিলেন:“একদিন এই পৃথিবীটা বাউলের পৃথিবী হবে।”এই উক্তি কোনো ভৌগোলিক জায়গার কথা নয়, বরং এক দর্শনের ভবিষ্যদ্বাণী। বাউল মানে প্রেম, সত্য, ভেদাভেদহীন মানবতা। শাহ করিম চেয়েছিলেন এমন এক পৃথিবী, যেখানে নেই হিংসা, নেই লোভ, নেই স্বার্থপরতার দেয়াল—বরং আছে হৃদয়ের টান, আছে সহজ-সুন্দর ভালোবাসার সেতুবন্ধন। করিমের জীবনদর্শন: প্রেম, সত্য ও সহজ সরলতা শাহ আব্দুল করিমের জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার কালনী নদীর তীরে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে। শৈশব থেকেই গান ছিল তাঁর সাধনার পথ। জীবনে দারিদ্র্য, বঞ্চনা, অবহেলা—সবই তিনি সয়েছেন। তবুও তাঁর গানে হতাশা নয়, উঠে এসেছে মানুষকে জাগানোর আহ্বান। তিনি বিশ্বাস করতেন—গান শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং এটি জীবনকে জানার, মানুষকে চেনার, সত্যকে উপলব্ধি করার মাধ্যম। তাঁর বাউল-ভাবনা ছিল মহাজাগতিক। তিনি মনে করতেন, মানুষ যদি নিজের ভেতরের মানুষকে চিনতে শেখে, তবে সমাজে থাকবে না বিভেদ, থাকবে না হানাহানি। তাঁর লেখা হাজারো গানের প্রতিটি লাইনেই আছে এই মানবিক দর্শনের ছাপ।

জীবদ্দশায় অবহেলা, মৃত্যুর পরেও সংকোচন শাহ আব্দুল করিম জীবনে প্রচুর গান লিখলেও, প্রচারের সুযোগ ছিল অল্প। জীবদ্দশায় তিনি অর্থাভাবে চিকিৎসা না পেয়ে কষ্ট করেছেন। তবুও তিনি গান ছাড়েননি, কারণ তাঁর কাছে গান মানে দর্শন, গান মানে সাধনা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে মৃত্যুর পরও করিম যেন সংকুচিত হয়ে আসছেন। এর মূল কারণ কপিরাইট জটিলতা। শাহ করিমের ছেলে শাহ নূরজালাল তাঁর বাবার গানের কপিরাইট নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। ফলে টেলিভিশন চ্যানেলগুলো করিমের গান প্রচারে আগ্রহ হারাচ্ছে। শিল্পীরাও ভয় পাচ্ছেন তাঁর গান গাইতে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করিমের গান আপলোড হলেই কপিরাইট ক্লেইম আসে।
ফলে ধীরে ধীরে করিম চর্চা কমছে।
কপিরাইটের দোহাই: করিমের গান কি হারিয়ে যাবে? কপিরাইট অবশ্যই শিল্পীর বা তাঁর উত্তরাধিকারীদের অধিকার। তবে প্রশ্ন হচ্ছে—যে গানগুলো জন্ম থেকেই জনগণের, যে গানগুলো দেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে, সেগুলোকে যদি আইনি শিকলে বেঁধে ফেলা হয়, তবে কি সেই গান বাঁচবে?
সংস্কৃতিমনস্ক অনেকেই বলছেন—করিম তাঁর জীবনে কখনও গানের বিনিময়ে অর্থ চাননি। তিনি গানকে দিয়েছেন মানবতার বার্তা ছড়ানোর শক্তি। অথচ তাঁর ছেলে সেই গানকে বানাচ্ছেন ব্যবসার পণ্য।
একজন সাংস্কৃতিক কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন: “করিমের গানে কপিরাইট বসানো মানে নদীর পানি আটকে দেওয়া। এতে নদী শুকিয়ে যাবে, গানও শুকিয়ে যাবে।”
আজকের প্রযুক্তির যুগে করিমের গান এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে গান, সুর, সংগীত—সবকিছু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে। কিন্তু করিমের গান কপিরাইটের জালে আটকে যাচ্ছে। যে শিল্পী তাঁর গান গেয়ে ফেসবুকে বা ইউটিউবে আপলোড করেন, তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে কপিরাইট নোটিশ দেওয়া হচ্ছে।
ফলে করিমের গান শোনানোর আগ্রহ কমে যাচ্ছে। শিল্পীরা বলছেন—ঝামেলা এড়াতে তাঁরা করিমের গান গাইতে চাইছেন না। অথচ করিমের গান যদি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে, তবে নতুন প্রজন্ম তাঁর দর্শনের সাথে পরিচিত হতে পারত। কপিরাইটের কারণে সেই সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে।
দর্শন বনাম ব্যবসা শাহ করিম ছিলেন দরিদ্র মানুষ। তিনি জীবনে বড় কষ্ট করেছেন, কিন্তু গান নিয়ে কখনও ব্যবসা করেননি। তাঁর দর্শন ছিল—“গান মানুষের জন্য, গান মানবতার জন্য।”আজ সেই গানের সত্ত্ব দোকান হয়ে বসেছে। নূরজালাল সাহেব কপিরাইট মামলার ঝড় তুলেছেন। ফলে গান গাইবার প্রবণতা কমছে। দোকান হয়তো দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু ক্রেতা কমে যাচ্ছে।
সংস্কৃতিজগতের বিশ্লেষকরা বলছেন—যদি কপিরাইটের এই গন্ডি না তোলা হয়, তবে করিমের গান চর্চা ক্রমশ সংকুচিত হবে। বাউল সম্রাট যিনি তাঁর জীবনে কোনো প্রাপ্তির আকাঙ্খা করেননি, মৃত্যুর পর তাঁর সৃষ্টিকে ব্যবসার মাল বানানো অন্যায়।
বাউল দর্শনের গুরুত্ব আজ আজকের পৃথিবী ভেদাভেদ, যুদ্ধ, স্বার্থ আর অস্থিরতায় জর্জরিত। এই সময়ে শাহ করিমের গান, তাঁর দর্শন, তাঁর ভাবনা হয়ে উঠতে পারে আশার আলো। তিনি যে “বাউলের পৃথিবী”-র স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটি মানে—মানবতার পৃথিবী, ভালোবাসার পৃথিবী। আজকের মানবসভ্যতা যখন টিকে থাকার সংগ্রামে লড়ছে, তখন করিমের সেই ভাবনাই মানুষকে পথ দেখাতে পারে। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উদ্যোগ প্রয়োজন সংস্কৃতিজনরা বলছেন—শাহ করিমের গানের স্বত্ত্ব রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা উচিত। গানের কপিরাইট ব্যক্তিগত হাতে না রেখে জাতীয় আর্কাইভ বা সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থার মাধ্যমে সংরক্ষণ করলে গান যেমন বাঁচবে, তেমনি শিল্পীর মর্যাদাও অক্ষুণ্ণ থাকবে।আজ প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শুধু শ্রদ্ধা জানালেই চলবে না, তাঁর সৃষ্টিকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ নিতে হবে। শাহ আব্দুল করিম ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন—বাংলার গান, বাংলার দর্শন, বাংলার সহজ সত্য-মানবতার প্রতিনিধি হয়ে। তিনি যে পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেখানে ভেদাভেদ থাকবে না, থাকবে শুধু ভালোবাসা—সেই পৃথিবী গড়ার দায়িত্ব আজ আমাদের হাতে। করিমের গানকে যদি আমরা আইনের শৃঙ্খলে বন্দি করে রাখি, তবে তাঁর স্বপ্ন হারিয়ে যাবে। আর যদি আমরা সেই গানকে ছড়িয়ে দিই, তবে একদিন সত্যিই এই পৃথিবী হবে বাউলের পৃথিবী। এই মহাজনের প্রয়াণ দিবসে



বিষয়: #  #  #  #  #


আর্কাইভ

সিলেট শহরের সকল হবিগঞ্জী --- --- ---

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
ভোলায় যৌথ অভিযানে অবৈধ ট্রলিংবোট ও বেহুন্দি জালসহ ৮ জেলে আটক
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পুলিশের বিশেষে অভিযানে গ্রেফতার-১
নোয়াখালীতে মাছ ধরার ট্রলারে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে বাবুর্চি দগ্ধ
রাণীনগরে বিদ্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ
দৌলতপুরে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু
উপদেষ্টার বিবৃতির প্রতিবাদ, গণছুটি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণা
ডেঙ্গুতে একদিনে ৬ জনের মৃত্যু
জাবির হল থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা আটক
সংস্কার প্রক্রিয়ায় সাফল্যের উপরেই নির্ভর করবে আগামীর বাংলাদেশ: আলী রীয়াজ
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ স্বাস্থ্যের ঠিকাদার মিঠু গ্রেফতার