

রবিবার ● ৮ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রবাসে » প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর ঘিরে উত্তেজনা, বিতর্ক ও কূটনৈতিক কৌতূহল
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফর ঘিরে উত্তেজনা, বিতর্ক ও কূটনৈতিক কৌতূহল
লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া ::
যুক্তরাজ্য সরকারের ঘোষিত ‘সরকারি সফর’-এ চার দিনের জন্য লন্ডনে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর এই সফর ঘিরে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তৈরি হয়েছে ব্যতিক্রমী আলোড়ন, উত্তেজনা এবং নানা মেরুকরণ।
ড. ইউনূসের সফরকে কেন্দ্র করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা স্পষ্টভাবে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একটি পক্ষ, যাদের ঘনিষ্ঠতা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের সাথে, তারা এই সফরের বিরোধিতা করে সরব প্রতিবাদের ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, ব্রিটেনে বসবাসরত আরেকটি বৃহৎ প্রবাসী অংশ তাঁর প্রতি উষ্ণ অভ্যর্থনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই বিতর্কের মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের এক খোলা চিঠি। হাউস অব কমন্সের অফিসিয়াল প্যাডে লেখা ওই চিঠিতে তিনি ড. ইউনূসকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং তাঁর সাথে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, “আমি সবসময় দুই দেশের মধ্যে সুস্থ ও শক্তিশালী সম্পর্ক গঠনের চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটির ভূমিকা এতে গুরুত্বপূর্ণ।”
চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিক একটি ভুল বোঝাবুঝির বিষয়েও স্পষ্টভাবে কথা বলেছেন, যেখানে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি তদন্তকে কেন্দ্র করে তাঁর মায়ের নাম উঠে এসেছে। তিনি উল্লেখ করেন, “আমি যুক্তরাজ্যের নাগরিক, লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছি এবং বাংলাদেশে আমার কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই।”
চিঠির মাধ্যমে তিনি ড. ইউনূসকে একটি ব্যক্তিগত আলোচনায় অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান, যেখানে তিনি তাঁর আইনজীবীদের প্রেরিত প্রতিবাদপত্র এবং একটি পার্লামেন্টারি রিপোর্টের কপি শেয়ার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই সফর শুধুমাত্র একটি আনুষ্ঠানিক সফর নয়, বরং এতে রয়েছে বেশ কিছু অপ্রকাশিত বার্তা ও রাজনৈতিক মেরুকরণের ইঙ্গিত। কারো মতে, টিউলিপ সিদ্দিক এই সাক্ষাতের মাধ্যমে অনেক অজানা তথ্য সামনে আনতে পারেন। আবার কেউ কেউ একে কেবল ব্রিটিশ সাংসদদের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে দেখছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ড. ইউনূসকে ঘিরে বিতর্ক ও আলোচনা ক্রমেই বাড়ছে। তবে, লন্ডনে তাঁর এই সফর এবং টিউলিপ সিদ্দিকের মত গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি এমপির পক্ষ থেকে প্রকাশ্য সমর্থন, সফরের তাৎপর্যকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।
লন্ডনের রাজপথে আগামী কয়েকদিনে হয়তো দেখা যাবে প্রতিবাদ ও সমর্থনের দুই বিপরীত চিত্র। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে — এই সফর শুধু একটি কূটনৈতিক সফর, নাকি নতুন কোনো রাজনীতির শুরু?
বিষয়: #ইউনূস #উত্তেজনা #উপদেষ্টা #কূটনৈতিক #কৌতূহল #ঘিরে #প্রধান #বিতর্ক #মুহাম্মদ #যুক্তরাজ্য #সফর