

শুক্রবার ● ১৩ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে শুক্রবার ঐতিহাসিক বৈঠক লন্ডনে
দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে শুক্রবার ঐতিহাসিক বৈঠক লন্ডনে
লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া:
বাংলাদেশের রাজনীতির একটি নতুন মোড় নেবার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে এই শুক্রবার সকালে, লন্ডনের অভিজাত হোটেল ডরচেস্টারে। এখানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বহুল প্রত্যাশিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক।
পশ্চিম লন্ডনের পার্ক লেন এলাকায় অবস্থিত এই হোটেলে সকাল ৯টায় শুরু হবে এই বৈঠক, যার দিকে এখন তাকিয়ে আছে সারা বিশ্বের বাংলাদেশি জনগণ। বৈঠকের আগের দিন, বৃহস্পতিবার, দুই পক্ষের প্রতিনিধিদল সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে আলোচনার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক রূপরেখা নির্ধারণ এবং একটি ঐক্যবদ্ধ ও নতুন রাজনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা। ড. ইউনূসের পক্ষ থেকেই এই বৈঠকের প্রস্তাব আসে এবং তারেক রহমান এই প্রস্তাবে সম্মত হন। এটি প্রমাণ করে, দুই পক্ষই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে একটি নতুন ভিত্তিতে দাঁড় করাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বৈঠকে আলোচ্য সম্ভাব্য বিষয়সমূহের মধ্যে রয়েছে:
১. বিএনপিকে ভারতের প্রভাববলয় থেকে নিরপেক্ষ করা।
২. আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির যেকোনো সমঝোতার পথ কঠোরভাবে রুদ্ধ রাখা।
৩. বহুল আলোচিত ‘জুলাই সনদ’-এ বিএনপির স্বাক্ষর নিশ্চিত করা ও এই আন্দোলনে যুক্ত সকলকে ‘জাতীয় বীর’ হিসেবে ঘোষণা।
৪. জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা দল বা ব্যক্তিকে ভবিষ্যতে রাজনীতি থেকে বিরত রাখা ও নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি না দেওয়া।
৫. সকল দলের স্বাক্ষরসহ গণভোটে জুলাই সনদকে সংবিধানের অপরিবর্তনীয় অংশে রূপান্তর।
৬. সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিচার কার্য সম্পন্ন করা।
৭. জুলাই সনদের ভিত্তিতে নতুন সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন।
৮. বিদায়ী সরকারের নিরাপদ প্রস্থান ও দায়মুক্তি চুক্তি।
ড. ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, বিএনপি যদি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে, তাহলে তারা আর পিছু হটার সুযোগ পাবে না। অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি এই সনদের ভিত্তিতেই পরিচালিত হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের সূচনা হতে যাচ্ছে—একটি বাংলাদেশ যেখানে, ড. ইউনূসের ভাষায়, “আওয়ামী লীগের আর কোনো স্থান থাকবে না।”
বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে বিদেশের মাটিতে একটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণের এমন উদ্যোগ বিরল। শুক্রবারের এই বৈঠক শুধু দুই নেতার নয়—এটি হতে যাচ্ছে একটি জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের এক যুগান্তকারী অধ্যায়।
বিষয়: #ঐতিহাসিক #দেশের #নির্ধারণ #বৈঠক #ভবিষ্যৎ #রাজনীতির #লন্ডনে #শুক্রবার