

বুধবার ● ২১ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » হাসিনার বিচারের প্রতি আমার আস্থা ছিল, কিন্তু এখন নেই
হাসিনার বিচারের প্রতি আমার আস্থা ছিল, কিন্তু এখন নেই
বজ্রকণ্ঠ ডেস্ক::
সারাদেশে রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সরকার জনদৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক।
দেশের বর্তমান বিচারব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিচারের প্রতি আমার আস্থা ছিল, কিন্তু এখন নেই।
বুধবার (২১ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিচার বিভাগ নিয়ে নিজের ‘অবিশ্বাসের’ কথা জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে ইশরাক হোসেনের শপথ আটকে রাখার অভিযোগও করেন তিনি।
আবদুল হামিদের (সাবেক রাষ্ট্রপতি) বিদেশ যাওয়ার নাটক দেখলাম, সেলিনা হায়াৎ আইভীর (নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র) গ্রেফতারের নাটক দেখলাম, সবশেষ অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার গ্রেফতারের নাটক দেখলাম। হচ্ছেটা কী দেশে? বাংলাদেশের জনগণের মূল দাবিগুলো অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই কি এসব নাটক হচ্ছে?
অনেককে গ্রেফতার যেমন করা হচ্ছে, আবারও জামিনও দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন রেখে ফারুক বলেন, তাহলে গ্রেফতার করারই কী দরকার, আর জামিন দেওয়ারই কী দরকার?
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ টেনে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, নয় মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিচালনায় বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা শেখ হাসিনা আমলের চেয়েও বেশি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে বিচারকদের রায় প্রভাবিত হচ্ছে।
ইশরাক হোসেনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, বিচারক রায় দিয়েছেন কার ইঙ্গিতে, কার বলে, কার পরামর্শে? আজকে জনগণ রাস্তায়, এই পরামর্শটা আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) না নিলেই পারতেন।
সাবেক এই চিফ হুইপ ড. ইউনূসের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনার হাতে ক্ষমতা আল্লাহ্ দিয়েছেন, জনগণ পাশে আছে। তাহলে কীসের এত ভয়? আপনার তো ভয় পাওয়ার কথা নয়। কারণ, সবাই আপনার সঙ্গে আছে, শুধু আওয়ামী লীগ ছাড়া। তাহলে কেন ইশরাক শপথ নিতে পারছেন না? ইশরাকের সমর্থকরা কেন সিটি করপোরেশন তালা দিলেন? ইশরাক কেন আজকে মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ অভিমুখে মিছিল করছেন?
‘আপনারা যদি কারও কান কথা শুনে ইশরাকের শপথগ্রহণ বন্ধ করে থাকেন, তাহলে এটি খুব ঘৃণিত কাজ করেছেন’- এ প্রসঙ্গে যোগ করেন তিনি।
জয়নুল আবদিন ফারুক আরও বলেন, আমি এসব প্রসঙ্গে যাবো না। আবদুল হামিদ প্রসঙ্গেও যেতে চাই না। একজন নায়িকার গ্রেফতার নিয়ে যে নাটক মঞ্চস্থ হলো আমি সেখানেও যেতে চাই না।
ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে আজ নির্বাচন কমিশনের সামনে আন্দোলন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এটিকে নতুন নাটকের মঞ্চায়ন বলে মন্তব্য করেন ফারুক।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যার কোনো সমালোচনা এখন পর্যন্ত হয়নি। এখন কী কারণে এবং কার ইঙ্গিতে সেই কমিশনের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে?
তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় তলে তলে আপনারা তাদের কথা শুনে ইশরাকের শপথ করান নাই এবং আবদুল হামিদের মতো কুখ্যাত লোককে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ করে দেশের মানুষকে ভোটের অধিকারের পথ থেকে বঞ্চিত করার পরিকল্পনা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আস্থার অভাবের কথা উল্লেখ করে ফারুক বলেন, আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) ওপর আস্থা-বিশ্বাস সব হারিয়ে গেছে।
তিনি প্রধান উপদেষ্টার সমালোচনা করে বলেন, আপনার (প্রধান উপদেষ্টার) সমালোচনা শেখ হাসিনা করেছে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, সংসদ ভবনে দাঁড়িয়ে। আপনাকে কোর্টের বারান্দায় দাঁড় করিয়েছেন শেখ হাসিনা।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ফারুক আরও বলেন, আপনাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস সবকিছুই মানুষ আজ হারিয়ে ফেলেছে। এসব হারিয়ে যাওয়ার পর কী হবে? কেউ লন্ডন চলে যাবে, কেউ আমেরিকা চলে যাবে। কেউ পরিবেশের নামে বিদেশ চলে যাবে। আপনার আশেপাশে যারা কান কথা দিয়ে আপনাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে, তারা তখন কেউই আপনার পাশে থাকবে না। আপনার সুনাম এবং অর্জন এরা ক্ষুণ্ন করে চলে যাবে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামান ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আ. ক. ম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
বিষয়: #আমার #আস্থা #এখন #কিন্তু #ছিল #নেই #প্রতি #বিচারের #হাসিনার