

বুধবার ● ২১ মে ২০২৫
প্রথম পাতা » Default Category » ছাতকে প্রকল্পের ঘুষের টাকা হজম করতে ৫ দিন ধরে লাপাত্তা পিআইও
ছাতকে প্রকল্পের ঘুষের টাকা হজম করতে ৫ দিন ধরে লাপাত্তা পিআইও
ছাতক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাবশালী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা পিআইও কে এম মাহবুর রহমান এখনো ও স্বপদে বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। গত ২০২৪ সালের ০৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর তিনি ছাতক থেকে বদলীর জন্য একাধিক চেষ্টা করে ব্যথ হয়েছেন। এর আগে ২০১৯ সালে কেএম মাহবুর রহমান ছাতক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তখন তাকে শাস্তির পরিবর্তে এখনো ও সংলিষ্ট কতৃপক্ষরা স্বপদে বহাল রাখা হয়। আবারো ঘুসের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে উপজেলায় হাতাহাতির ঘটনা নিয়ে জেলাজুড়েই ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
ছাতকে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের ঘুষের টাকা হজম করতে ৫দিন ধরে লাপাত্তা পিআইও কেএম মাহবুর রহমান। ছুটি না নিয়ে তিনি গত শনিবার থেকে কার্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। কার্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় কাজ করে বিলের টাকা পাচ্ছেন না প্রকল্পের কমিটির সদস্যরা।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) হিসেবে যোগদান করেন কেএম মাহবুব রহমান। এখানে যোগদানের পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গড়ে তুলেন একটি লুটপাট ভুয়া প্রকল্পের সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সম্প্রতি কাজ না করে অসংখ্য প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিস্তর অভিযোগ ওঠে ওই দূর্নীতিবাজ পিআইওর বিরুদ্ধে। বছরের পর বছর এখানে থাকা অবস্থায় প্রকল্পের ঘুষের টাকায় নিরবে করেছেন সম্পদের পাহাড়। তার অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে স্থানীয় ও জাতীয় একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও রহস্যজনক কারণে থেকে যায় বহাল তবিয়তে।
সর্ব শেষ ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর কৌশলে এখান থেকে বদলীর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওই পিআইও। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি ১৪ মে পর্যন্ত ট্রেনিংয়ে থাকা অবস্থায় দুই মাস ওই পিআইওর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমান। তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।এদিকে, ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২শত ২৭টি প্রকল্পের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে ছাতকের পিআইওর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পিআইওকে ১৬ মে সন্ধ্যায় বাসায় ডাকেন ইউএনও। উপস্থিত ছিলেন ছাতক পিআইও কার্যালয়ের কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামও। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় এবং প্রকল্পের কোন ধরণের ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ছাড় দেওয়া হবেনা বলে সাফ জানিয়ে দেন ইউএনও।
জানা গেছে, পর দিন শনিবার অফিস করেন নি পিআইও কেএম মাহবু্ব রহমান। ওইদিন রাতে ইউএনও বরাবরে তিন দিনের ছুটি চেয়ে একটি আবেদন লিখে ইউএনওকে না দিয়ে নিজ কার্যালয়ের টেবিলে রেখে কৌশলে ছাতক ত্যাগ করেন ওই দূর্নীতিবাজ পিআইও। ঘুষ দূর্নীতির টাকা হজম করতে ওই পিআইও জেলা প্রশাসকের কাছে ছাতকের ইউএনও ও পিআইও অফিসের কার্যসহকারির বিরুদ্ধে একটি নাটক সাজিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। গত মঙ্গলবার কার্যসহকারি নাজমুল ইসলামকে ছাতক থেকে রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলায় বদলি করা হয়। পিআইওর ঘুষ দূর্নীতি প্রকাশের ভয়ে এখান থেকে বদলি চেষ্টা চালানো হয়।
উপজেলার মুক্তিরগাঁও গ্রামের ইজাজুল হক রনি জানিয়েছেন, তিনি মুক্তিরগাঁও গ্রামের রাস্তার উভয় পাশে মাটি ভরাট কাজের সেক্রেটারি। তার কাছ থেকে সরকারি খরচের নামে ২৪ হাজার ৫শ’ টাকা নিয়েছেন পিআইও কেএম মাহবুবুর রহমান। হাসনাবাদ-নয়া লম্বাহাটি রাস্তায় মাটি ভরাট কাজের সেক্রেটারি বাহাউদ্দিন শাহীর কাছে ১২ হাজার টাকা চেয়েছে ওই পিআইও। এছাড়া প্রকল্পের খরচের নামে ওই পিআইও প্রকল্প কমিটির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে উপজেলা পিআইও অফিসের কার্য সহকারি নাজমুল ইসলাম এসব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ইউএনও ও পিআইওর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। গত শনিবার থেকে পিআইও অফিসে নেই। শুনেছেন ওই পিআইও তাকে এখান থেকে বদলি করান। এব্যাপারে পিআইও কেএম মাহবু্ুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। এব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান প্রকল্পের টাকা লেনদেনের ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, ইউএনও পিআইও’র মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও নাজমুলের বদলির ঘটনা তিনি শুনেছেন বলে জানিয়েছেন।
বিষয়: #করতে #ঘুষের #ছাতকে #টাকা #ধরে #পিআইও #প্রকল্পের #লাপাত্তা #হজম #৫ দিন