

শনিবার ● ১২ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » খুলনা » পাইকগাছায় জমি দখলে কেন্দ্র করে আহত ৬
পাইকগাছায় জমি দখলে কেন্দ্র করে আহত ৬
::কপিলমুনি (খুলনা) প্রতিনিধি:: খুলনার পাইকগাছায় সলুয়ায় গ্রামে জমি দখলে কেন্দ্র করে একই পরিবারের মহিলাসহ অন্তত ৬ জনকে কুপিয়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
হতাহতের খবর সংগ্রহে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তথ্যানুসন্ধানে জানাযায়, উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের রামচন্দ্র নগর ও রামনাথপুর মৌজার ১৮.৮৪ একর জমির মালিকানা নিয়ে আয়ুব আলী ফকিরদের সাথে একই ইউনিয়নের কাজীমুছা এলাকার মৃত ইজাহার হালদারের ছেলে কওছার হালদার ও মৃত মোহর হালদারের ছেলে মইনুল হালদারের ওয়ারেশদের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধের জেরে মামলা-হামলা চলে আসছে। সূত্র জানায়, সিএস রেকর্ডীয় মালিক মৃত বছির সরদারের ছেলে জহর আলী সরদার ও জনাব আলী সরদারের ১৯৪৩ সালে কালাজ্বরে মৃত্যু হলে জহর আলীর স্ত্রী আয়েশা বেগম ও তার ৩ মেয়ে রমেছা বেগম, নূরজাহান ও হালিমা বেগম জহরদের ৩ ফুফু জীবত ছিলেন। পরবর্তীতে একই ইউনিয়নের কাজীমুছা এলাকার মৃত ইজাহার হালদারের ছেলে কওছার হালদার ও মৃত মোহর হালদারের ছেলে মইনুল হালদার দিং ভ‚য়া নিলাম খরিদ ও জাল দলিল সৃৃষ্টি করত তাদের রেখে যাওয়া ১৮.৮৪ একর সম্পত্তির অংশ বিশেষ দখল নেয়। এদিকে জহর আলীর মৃত্যুর পর তার তিন মেয়ে তাদের মা আয়েশাকে ফের স্থানীয় কাদের বক্স ফকিরের সাথে বিয়ে দেন। সেখানে জন্ম হয় একমাত্র ছেলে আপ্তাব ফকিরের। এরপর আপ্তাব ৯ ছেলে, ৫ মেয়ে ও ২ স্ত্রী রেখে মৃত্যু বরণ করেন, ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি। এর আগে আপ্তাবের মা আয়েশা বেগম তার পূর্বতন স্বামীর প্রাপ্ত সম্পত্তির অংশ ও ৩ মেয়ে তাদের সম্পত্তির দেখভালের জন্য তাদের সম্পত্তি পাওয়ার অব এ্যাটর্নী করে যান তার নামে। এরপর আপ্তাব তার মৃত্যুপূর্ব ও পরে ছেলের মধ্যে একজন আয়ুব আলীর নামে ঐ সম্পত্তির ফের পাওয়ার অব এাটর্নী করেন। অন্যদিকে কাজীমুছার কওছার হালদার ও মঈনুল হালদার দিং উক্ত সম্পত্তির ভ‚য়া ও তঞ্চকতাপূর্ণ কাগজপত্র সৃষ্টি করলে জহরের ৩ মেয়ে ও আপ্তাবদিং তাদের বিরুদ্ধে স্বত্ত¡প্রচার ও বাটোয়ারা মামলা করলে আদালত ২০০১ সালে তাদের পক্ষে ৩.২৬ একর জমির রায় ডিক্রী প্রদান করেন। এরপর আপিল মামলায়ও তাদের পক্ষে রায় বহাল রাখে আদালত। এরআগে বিআরএস জরীপে তাদের পক্ষে .৯২ একর জমির রেকর্ড দেয়। সর্বশেষ সমুদয় সম্পত্তির রেকর্ড সংশোধন মামলাসহ একাধিক মামলা বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ঠিক এমন অবস্থায় ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে আকবর শেখ (৫৭), রেজাউল মোড়ল (৪৫), হেকমত (৫০), কালু (৪৫), নূর আরী (৫৭), হাসান মোল্যা (৫০), সওকত ও লিয়াকতসহ প্রায় ৫০ জনের সংঘবদ্ধ গ্রæপ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে আয়ুব আলী ফকিরদের পুরুষশূণ্য বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর ও বাড়িতে উপস্থিত মহিলাদেরকে কুপিয়ে মারাতœক যখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। আহতরা হলেন, মৃত আপ্তাব ফকিরের স্ত্রী জরিনা বেগম (৬৫), জরিনার মেয়ে ও মিজানুর রহমানের স্ত্রী, জান্নাত আরা (৪৫), ও তার স্বামী মিজানুর (৫০), জরিনার পুত্রবধূ ও আমানুল¬াহর মনুর স্ত্রী আয়রা বেগম (৪৫), জয়নাব বেগম (৪৬) ও তার ছেলে আকাশ (১৮)।খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। আয়ুব আলী ফকিরের দাবি, তৃতীয় পক্ষ আকবর আলী শেখদিং ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার কপিলমুনি হাটবার তার পূরুষশূণ্য বাড়িতে সশস্ত্র হামলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিচিত-অপরিচিতদের ভাড়াটিয়াদের নিয়ে যায়। এসময় তারা নিজেদের চিনতে না পারায় তাদের লোকদের পাশাপাশি নিজেদের আকবরসহ কয়েকজনকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। তারাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের দক্ষিণ সলুয়া গ্রামের ঐ এলাকার ঝন্টু, আমেনা বেগম, আরশাদ আলী, রফিকুল ইসলামরা বলেন প্রকাশ্যে দিনের বেলায় সিনেমার মত অস্ত্র লাটি শাবল দা দিয়ে আয়ুব পরিবারকে কুপিয়েছে, আমরা আতংকে রয়েছি বহিরাগতরা আবারও হামলা করে কিনা। তারা আরও বলেন প্রতি বছর ধারাবাহিক ভাবে এ অসহায় পরিবারের জমিতে হামলা করে আসছে। আয়ুব আলীর অভিযোগ, তাদের পক্ষের আহতদের হাসপাতালে সু-চিকিৎসা দিতে বাঁধা প্রদান ও থানায় মামলা না করতে হুমকি-ধামকি ও প্রভাবিত করা হচ্ছে। পাইকগাছা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সবজেল হোসেন জানান ঘটনাটা শুনা মাত্রই পুলিশ পাঠিয়ে আহতদেরকে আগে চিকিৎসা প্রদান করতে বলেছি। তদন্ত পূর্বক মামলা হবে।
বিষয়: #আহত #৬
