

শুক্রবার ● ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সুনামগঞ্জে স্মশানঘাটের নামে পাকা রাস্তা দখল নিয়ে দুপক্ষ মুখোমুখি
সুনামগঞ্জে স্মশানঘাটের নামে পাকা রাস্তা দখল নিয়ে দুপক্ষ মুখোমুখি
হোসাইন মাহমুদ শাহীন,সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নবীনগর ধোপাখালী এলাকায় স্মশানঘাটের বৈঠকখানা,টয়লেট ও পানির ট্যাংকি স্থাপনের নামে সরকারী খাস খতিয়ানের জায়গার উপর নির্মিত পাকা রাস্তা দখলের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর মডেল থানায় পৃথক পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা জামাত কর্মী মোঃ নাছির উদ্দিন। পৌরসভার মূল সড়কের উত্তর পাশ দিয়ে খালের মুখ পর্যন্ত গামী রাস্তাটির উপর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে এলাকার কতিপয় চিহ্নিত লোক। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়,নিজগাঁও মৌজার ২৯ নং জেএলস্থিত ১নং আরএস খতিয়ানের ৪নং দাগে মোট ১২ শতক জায়গা রয়েছে পাকা রাস্তার নামে। রাস্তার পূর্ব দিকে একই খতিয়ানের ৬নং দাগে ৩৩ শতক স্মশানঘাটের এবং ৫ নং দাগের ১৬ শতক খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের কবরস্থানের নির্ধারিত জায়গা বিদ্যমান। ১৯৩৬ সালে ঐ এলাকায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের কবরস্থান নির্মিত হয়। গত ২০/১০/১৯৯৮ইং তারিখে সবদাহ গৃহের অর্থাৎ স্মশানঘাটের উদ্বোধন করেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান দেওয়ান মমিনুল মউজদীন। স্মশানঘাট নির্মাণের পর থেকে ঐ এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিছ আলীর পরিবারের সাথে দীর্ঘদিনের বিরোধের ধারাবাহিকতায় পৌর কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টায় পাকা রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে ৯ ফুট উচু একটি পাকা দেয়াল নির্মাণ করা হয়। নবনির্মিত ঐ দেয়াল স্থাপনের মাধ্যমেও পাকা রাস্তার জায়গা স্মশানের সীমানার ভিতরে অবৈধ দখলে নেয়ার অভিযোগ উঠে। রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন স্থানীয় বাসিন্দা নাছির উদ্দিনসহ তাদের ৩টি পরিবার ও সুরমা পাড়ের তীরবর্তি জগন্নাথপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের বাধাবিপত্তিকে উপেক্ষা করে ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর থেকে পর্যায়ক্রমে পাকা রাস্তার পাশাপাশি খ্রিষ্টানদের কবরস্থানের জায়গা জোরপূর্বক দখল করা হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা নাছির উদ্দিন,গত ৩/৮/২০২৫ইং ও গত ১১/০৮/২০২৪ইং তারিখে জেলা প্রশাসক,পৌর প্রশাসক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে,১৫/০৭/২০২৪ইং ও ২৭/১০/২০২৪ইং সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে সরকারী পাকা রাস্তার জায়গা জোরপূর্বক দখলকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরও এ ব্যাপারে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। জানতে চাইলে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের কবরস্থানের জায়গা দেখভালের দায়িত্বে থাকা ডেনিস চক্রবর্ত্তী বলেন,আমরা সুনামগঞ্জ শহরে বর্তমানে ৪টি সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান পরিবার রয়েছি। নবীনগর ধোপাখালি এলাকায় আমাদের কবরস্থানটি প্রথমে প্রতিষ্ঠিত হয়। দিনের পর দিন স্মশানঘাটের নামে আমাদের জায়গা দখল করে নিচ্ছে চিহ্নিত দখলবাজরা। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে বারবার নালিশ করেও আমরা কোন ন্যায়বিচার পাচ্ছিনা। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় স্মশানঘাট কমিটির ক্যাশিয়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুমন সাহা বলেন,ডিসি খতিয়ানের জায়গায় আমাদের স্মশানঘাট অবস্থিত। কেন্দ্রীয় স্মশানঘাট কমিটির বর্তমান সভাপতি হচ্ছেন পৌর প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ রেজাউল করিম। প্রতি ৩ বছর মেয়াদী ৫১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি এই স্মশানঘাট পরিচালনা করে থাকে পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে। স্মশানঘাটের জায়গা ও পাকা রাস্তার জায়গা এখানকার সবকিছুর মালিক রেকর্ড অনুযায়ী জেলা প্রশাসক। স্মশানঘাটের উন্নয়নে যাযা করার দরকার তার সবকিছুই প্রশাসন করছে। পৌর প্রশাসক এডিএম রেজাউল করিম এর অনুমতি নিয়ে আমরা বৈঠকখানা,টয়লেট ও পানির ট্যাংকি স্থাপন করে যাচ্ছি। সুতরাং আমাকে জড়িয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা একেবারেই বানোয়াট ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক বটে। এদিকে অভিযোগকারী ১নং ওয়ার্ড শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি জামাত নেতা নাছির উদ্দিন বলেন প্রতিপক্ষরা ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে আমার ইদ্রিছ ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপে অনধিকার প্রবেশ করে আমাকে খুন করার চেষ্টা করলে আমি বিষয়টি রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের মাধ্যমে পৌর প্রশাসককে অবহিত করেছি। সদর মডেল থানার এস আই হানিফ ও সার্ভেয়ার এডিএম রুহুল আমিন সরজমিন পরিদর্শন করে আমার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। আমি আশাবাদী দখলবাজীর বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার পাবো।
বিষয়: #দখল #নাম #পাকা #মুখোমুখি #রাস্তা #সুনামগঞ্জ #স্মশানঘাট