শিরোনাম:
ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২
বজ্রকণ্ঠ "সময়ের সাহসী অনলাইন পত্রিকা", সিলেট ঢাকা লন্ডন নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত। ই-মেইল: ঠিকানা:: news@bojrokontho.com অনুগ্রহ করে সংবাদ প্রতিবেদন, ছবি এবং ছোট ভিডিও পাঠান। লগইন করুন: www.bojrokontho.com

Bojrokontho
শনিবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » ধর্ম » তকদিরে বিশ্বাসের ৪ স্তম্ভ
প্রথম পাতা » ধর্ম » তকদিরে বিশ্বাসের ৪ স্তম্ভ
১৯৯ বার পঠিত
শনিবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

তকদিরে বিশ্বাসের ৪ স্তম্ভ

বজ্রকণ্ঠ ডেস্ক::
তকদিরে বিশ্বাসের ৪ স্তম্ভতকদিরে বিশ্বাসের ৪ স্তম্ভ

তকদিরে বিশ্বাস হলো ঈমানের পঞ্চম স্তম্ভ যেমন নবিজি (সা.) ‘হাদিসে জিবরাইলে’ বলেছেন। জিবরাইল (আ.) যখন নবিজিকে (সা.) ইমান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তখন নবিজি (সা.) বলেছিলেন, ইমান হলো, বিশ্বাস স্থাপন করা আল্লাহর ওপর, তাঁর ফেরেশতাদের ওপর, তাঁর কিতাবসমূহের ওপর, তাঁর রাসুলদের ওপর, আখেরাতের ওপর এবং তকদিরের ওপর যে—তার ভালো ও মন্দ উভয়টি আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেই নির্ধারিত। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, নবিজি (সা.) বলেছেন, সব কিছু তকদিরে নির্ধারিত—এমনকি অক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তাও। (সহিহ মুসলিম) এখানে অক্ষমতা বলতে বোঝানো হয়েছে—কোনো কাজ করতে অলসতা, আর বুদ্ধিমত্তা অর্থ—কোনো কাজে উদ্যম ও দক্ষতা অর্থাৎ অক্ষম ব্যক্তির অক্ষমতাও নির্ধারিত, আর বুদ্ধিমান ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তাও নির্ধারিত।

আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি তো সব কিছুই সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে। (সুরা কামার: ৪৯)

যেহেতু তকদিরে বিশ্বাস ইমানের অন্যতম স্তম্ভ, তাই যে তা অস্বীকার করে, সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। নবিজি (সা.) বলেন, কোনো বান্দা ইমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে চারটি বিষয়ে ইমান আনে, সে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল, আমাকে সত্যসহ পাঠানো হয়েছে, সে মৃত্যুতে বিশ্বাস রাখবে, মৃত্যুর পর পুনরুত্থানে বিশ্বাস রাখবে এবং তকদিরে বিশ্বাস রাখবে। (সুনানে তিরমিজি)

শরিয়তের পরিভাষায় তকদিরের অর্থ হলো—বিশ্বজগতে যা ঘটেছে, ঘটছে ও ঘটবে সব কিছুই আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করে রেখেছেন এবং তিনি জানেন কোনো কিছু কবে ঘটবে, কীভাবে ঘটবে, কী পরিমাণে ঘটবে। তিনি তা লিপিবদ্ধ করেছেন এবং তিনি তা চান। ঘটনাগুলো ঠিক সেভাবেই ঘটে যেমন তিনি নির্ধারণ করেছেন এবং সৃষ্টি করেছেন।

এই সংজ্ঞা অনুযায়ী তকদিরে বিশ্বাসের অংশ বা স্তম্ভ চারটি:

প্রথম স্তম্ভ হলো, বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তাআলা সব কিছু জানেন—বিশ্বজগতে যা ঘটেছে, যা ঘটবে, এমনকি যা ঘটেনি যখন ঘটবে কীভাবে ঘটবে সবই তিনি জানেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর জ্ঞানের মাধ্যমে সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছেন। তাঁর কাছে কিছুই গোপন থাকে না, এমন কি একটি পরমাণুও নয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তিনি আল্লাহ, যিনি সাত আসমান এবং অনুরূপ জমিন সৃষ্টি করেছেন; এগুলোর মাঝে তাঁর নির্দেশ অবতীর্ণ হয় যেন তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান এবং আল্লাহর জ্ঞানতো সব কিছুকে পরিবেষ্টন করে আছে। (সুরা তালাক: ১২) আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর জ্ঞান রাখেন। (সুরা তাওবা: ১১৫)

ইমরান ইবন হুসাইন (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল, জান্নাতিরা কি জান্নাতি, আর জাহান্নামিরা কি জাহান্নামি হিসেবে পূর্বেই নির্ধারিত? তিনি বললেন, হ্যাঁ। সে বলল, তাহলে আমলকারীরা কেন আমল করে? তিনি বললেন, প্রত্যেকের জন্য তা-ই সহজ করে দেওয়া হয়, যেটির জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)

দ্বিতীয় স্তম্ভ হলো বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তাআলা সমস্ত সৃষ্টির তকদির একটি কিতাবে লিখে রেখেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ভূ-পৃষ্ঠে চলাচলকারী প্রতিটি জীব এবং বায়ুমন্ডলে ডানার সাহায্যে উড়ন্ত প্রতিটি পাখীই তোমাদের ন্যায় এক একটি জাতি, আমি কিতাবে কোন বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে বাদ রাখিনি। অতঃপর তাদের সকলকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে। (সূরা আনআম: ৩৮)

রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করার পঞ্চাশ হাজার বছর আগে সমস্ত সৃষ্টির তকদির লিখে ফেলেছেন। (সহিহ মুসলিম) আরেকটি বর্ণনায় এসেছে রাসুল বলেছেন, আল্লাহ তাআলা প্রথমে কলম সৃষ্টি করলেন, তারপর বললেন, লিখ। কলম বলল, হে আমার রব! আমি কী লিখব? আল্লাহ তাআলা বললেন, কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে, সবকিছু লিখে ফেল। (সুনানে আবু দাউদ)

তৃতীয় স্তম্ভ হলো, বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ তাআলার যা কিছু ইচ্ছা, তাই ঘটে আর যা কিছু তিনি ইচ্ছা করেন না, তা ঘটে না। তিনি যা চান, সেটাই হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, আর তোমরা ইচ্ছা করতে পার না, যদি না সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ ইচ্ছা করেন। (সুরা তাকভীর: ২৯)

রাসুল (সা.) বলেন, সমস্ত আদমসন্তানের অন্তর রহমানের দুই আঙুলের মাঝে রয়েছে, তিনি যেভাবে চান সেভাবে তা ঘুরিয়ে দেন। (সহিহ মুসলিম)

চতুর্থ স্তম্ভ হলো, বিশ্বাস করা যে, এই জগতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর সৃষ্টি। আল্লাহ তাআলা বলেন, আল্লাহই সব কিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক। (সুরা যুমার: ৬২)

যখন কোনো মুসলমান তকদিরের এই চার স্তম্ভে পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে, তখন তার অন্তর প্রশান্ত হয়, মনের উদ্বেগ দূর হয়। তার অন্তরে বিশ্বাস থাকে যে, তার একজন অভিভাবক রয়েছেন, একজন সাহায্যকারী রয়েছেন, যিনি সব কিছু দেখেন, জানেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন। সব কিছুই তাঁর জ্ঞানের আওতায়, তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী, এবং তাঁর নির্ধারিত পরিমাণেই ঘটে। তিনি সব কিছু নির্ধারণকারী, তিনিই সব কিছু সহজকারী, সমস্ত বিষয়ের চাবিকাঠি তাঁরই হাতে। তাই একজন মুসলমান কেন অন্য কাউকে ভয় করবে, বা কেন সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ওপর ভরসা রাখবে!


সূত্র: ইসলাম ওয়েব



বিষয়: #  #  #  #


ধর্ম এর আরও খবর

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছাবে মডেল মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছাবে মডেল মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা
আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ
আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে ওয়েলস ডিভিশন এর এজিএম ও লিডারশীপ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত আনজুমানে আল ইসলাহ ইউকে ওয়েলস ডিভিশন এর এজিএম ও লিডারশীপ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.)-এর ৫ম বার্ষিক ঈসালে সাওয়াব মাহফিল ১০ জুলাই ২০২৫ আল্লামা দুবাগী ছাহেব (রহ.)-এর ৫ম বার্ষিক ঈসালে সাওয়াব মাহফিল ১০ জুলাই ২০২৫
মহররম মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত! মহররম মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত!
আমার স্মৃতিপটে শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ! ডঃ আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী। আমার স্মৃতিপটে শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা মুফতি মুজাহিদ উদ্দীন চৌধুরী দুবাগী ছাহেব কিবলাহ রাহিমাহুল্লাহ! ডঃ আল্লামা মুফতী মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী।
সুদের টাকা মসজিদে দান করা যাবে? সুদের টাকা মসজিদে দান করা যাবে?
আগে সালাম দেওয়ার ফজিলত আগে সালাম দেওয়ার ফজিলত
কোরবানির দিনের উত্তম আমল কোরবানির দিনের উত্তম আমল
জিলহজ্জ মাসের ফজিলত ও ইবাদত! জিলহজ্জ মাসের ফজিলত ও ইবাদত!

আর্কাইভ