

রবিবার ● ২৯ জুন ২০২৫
প্রথম পাতা » নবীগঞ্জ » মসজিদে মাইকিং করে ডাকাত এসেছে বলে আসামী ছিনতাই!
মসজিদে মাইকিং করে ডাকাত এসেছে বলে আসামী ছিনতাই!
” নবীগঞ্জে আসামী ধরে নিয়ে আসার সময় মসজিদে মাইকিং করে ডাকাত এসেছে বলে আসামী ছিনতাই! পুলিশের ভ্যান ভাংচুর! সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশে অভিযান আটক ১৩ জন ”
বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:-
পুলিশ মামলার আসামি ধরতে গেলে রাতে মসজিদের মাইকে মাইকিং করে “ডাকাত” ঘোষনা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের ভ্যান গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে ঢাকা সিলেট মহা সড়কের নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজারে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের যৌথ চিরুনি অভিযানে ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে হামলাকারীরা পুলিশ সদস্যদের মারধর, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পুলিশের একটি ভ্যান গাড়ি ও দুটি সিএনজি ভাংচুর করেন। শনিবার (২৮ জুন) ভোররাতে উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নবীগঞ্জ থানার কনস্টেবল শাহ ইমরান (২৭), মোজাম্মেল হক (২৫) ও পল্টন চন্দ্র দাশ (২৫) আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত (৩১ মে) নবীগঞ্জ উপজেলার জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রায় ৭০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ঐ হাট বাজার এলাকায় অভিযান চালান। এক পর্যায়ে হাট কমিটির সদস্য ও অন্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারী কাজে বাঁধা দেন। তাঁরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে অসদাচরণ করেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদারকে টেলা ধাক্কা ও লাঞ্চিত করা হয়। এরপরও দিন ব্যাপী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট চালু রাখে হাট কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় পরদিন (১ জুন) পানিউমদা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে
গত শনিবার ভোররাতে এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি দক্ষিণ গজনাইপুর গ্রামের নজর উদ্দিন (৪০) কে গ্রেফতার করতে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো: কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ থানা ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের একটি পুলিশের বিশেষ দল অভিযান চালায়। নজর উদ্দিনের বসতঘরে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে, এ সময় অন্য আসামিরা গ্রামের মসজিদে ‘ডাকাত এসেছে’ বলে মাইকিং করে। এতে গ্রামের কয়েক শতাধিক লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে পুলিশের কাছ থেকে নজর উদ্দিনকে ছিনিয়ে নেয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয় এবং সংঘর্ষে পুলিশের একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি শেখ মো: কামরুজ্জামান বলেন, জনতার বাজারের ঘটনায় দুপুরে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাছাই বাছাই করে কয়জন গ্রেফতার বলা যাবে।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং সেনা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের যৌথ জটিকা অভিযান চালানো হয়। আমাদের ক্যাম্পের একদল সেনা সদস্য তাদের সহায়তা করে। এ সময় ১৩ জনকে আটক করা হয়। এবং তাদেরকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এ এন এম সাজেদুর রহমান বলেন, এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেফতারের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতারের সময় স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে আমাদের তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন। একটি ভ্যান ও দুটি সিএনজি ভাঙচুরও তারা করে। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে এবং দোষীদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।