আল-হেলাল, সুনামগঞ্জ।
সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও কিশোরীদের মধ্যে গুড়ো দুধ ও স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন। ২৩ জুন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র,মইনপুর গ্রাম,রঙ্গারচর ইউনিয়নের হাসাউড়া ও বনগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সহায়তা হিসেবে এসব খাদ্যসামগ্রী ও উপকরন প্রকৃত উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরন করা হয়। উক্ত ত্রাণ বিতরন কর্মসুচিতে সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের সদস্যা মোছাঃ তানজিনা বেগম রোখশানা,আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক শিল্পী আল-হেলাল,সমাজসেবী এরন মিয়া,মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশন এর স্বেচ্ছাসেবী শাহরিয়ার খান ইমন,ফয়সাল খান,আব্দুস সামাদ ঝুমন,মুস্তাকিম আহমেদ,সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর ভলান্টিয়ার মুর্শিদা সিদ্দিকা মারিয়া,দীপা বর্মন ও মেহেরুন নেছা সিদ্দিকা মীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে স্বেচ্ছাসেবীরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ইব্রাহিমপুর সরকারী আশ্রয়কেন্দ্রে অনাহারে মৃত্যু হওয়া জারীগানের শিল্পী মোঃ আশরাফ আলীর দৌহিত্র আপন আনোয়ারের হাতে বিশেষ ত্রাণসামগ্রীর প্যাকেট হস্তান্তর করেন।
উল্লেখ্য গতানুগতিক ধারার বাইরে খুবই প্রয়োজনীয় এবং জরুরী দুটি সামগ্রী সহ অন্যান্য ত্রানসামগ্রী নিয়ে হাজির হয় মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনের একদল স্বেচ্ছাসেবী। ৩০০ শিশুর জন্য নিডো দুধের প্যাকেট,৫০০ স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং ৫০ টি পরিবারের জন্য পুরো সপ্তাহের বাজার। বিশেষ করে দুধের প্যাকেট পেয়ে ২-৫ বছরের বয়সের শিশুদের মুখে ফোটে উঠে নির্মল আনন্দের হাসি। শত শত শিশুদের হাসিমুখ সাময়িক সময়ের জন্য হলেও অন্যান্যদেরকেও ছুয়ে যায়। অপরদিকে নারীরা স্যানিটারি ন্যাপকিন পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে। এরপর স্বেচ্ছাসেবীরা একেবারে প্রান্তিক দূর্গম অঞ্চলে ৫০ টি পরিবারে পৌঁছে দেয় পুরো সপ্তাহের বাজার চাল,ডাল,আলু,চিনি,মুড়ি,চিড়া,দুধ,লবন,পিয়াজ প্রয়োজনীয় ঔষধ সহ অন্যান্য সামগ্রী। সংগঠনের প্রধান উপদেস্টা তাসমিমা হোসেন বলেন ‘যে কোন দূর্যোগে নারী-শিশুরা থাকে সবচেয়ে বেশী বিপদে আর বিপদের দিনে এদের পাশে কোন না কোন ভাবে থাকতে পেরে কিছুটা হলেও স্বস্তি লাগছে। সংগঠনের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী মারিয়া বলেন প্রতিদিন প্রচুর ত্রান আসছে কিন্তু মুক্তির বন্ধন ফাউন্ডেশনের মতো করে নারী শিশুদের জন্য কেউ ভাবেনি। ফলে এই ত্রান বিতরণ করতে গিয়ে এতোটা আনন্দ পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা। সংগঠনের মূল স্বেচ্ছাসেবী ইমন বলেন,আমরা একযোগে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা এবং ময়মনসিংহে ত্রানতৎপরতা চালাচ্ছি নীরবে। শতাধিক দক্ষ স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে রাতদিন কাজ করছে। দাতাদের উচিৎ ত্রান বিতরণে দক্ষ প্রতিষ্ঠানের পাশে এগিয়ে আসা। ত্রান বিতরণ স্থলে শিশুদের উচ্ছ্বাস সত্যিই চোখে পড়ার মত ছিলো আজ কেননা দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের পক্ষে চিড়া মুড়ি খাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কল্যাণে তিন শতাধিক শিশু অন্তত এক সপ্তাহ খাদ্যাভাবে ভুগবেনা।
পাঠকের মন্তব্য