মনির হোসেন,মোংলা:: ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো,
দিও তোমার মালাখানি বাউলের এই মনটারে…. সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ৩১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দিনটি উপলক্ষে রুদ্র স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, অন্তর বাজাও শিল্পী গোষ্ঠী, মোংলা সাহিত্য পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ মাত্র ৩৪ বছর বয়সে কবিতার খাতা ফেলে চলে গেছেন মৃত্যুলোকের ওপারে। তাই আকাশের ঠিকানায় আজ তার ভক্তরা রুদ্রকে লক্ষ্য করে হাজার চিঠি লিখবে। কবিতার ছন্দে গাঁথবে হাজারো মালা। সেই মালায় আজীবন চিরভাস্কর হয়ে থাকবে রুদ্রের স্মৃতি। মৃত্যুদিনে এই অকাল প্রয়াত কবির জন্য অফুরন্ত প্রার্থনা। আমার ভিতর-বাহিরে অন্তরে-অন্তরে, আছো তুমি হৃদয় জুড়ে। হ্যা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, সত্তর দশকের অন্যতম জনপ্রিয় কবি আমাদের হৃদয়ের মণিকোটায় সমস্ত জায়গাজুড়ে বিস্তারমাণ আছেন। প্রতিশ্রুতিশীল এই কবির প্রতিভা পূর্ণ বিকশিত হওয়ার আগেই মাত্র ৩৪ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমান শক্তিমাণ এই লেখক। ১৯৯১ সালের ২১ জুন ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসভবনে আকস্মিক হ্নদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ মূলত কবি হলেও কাব্য চর্চার পাশাপাশি সঙ্গীত, নাটক, ছোটগল্পের ক্ষেত্রেও ছিলেন সমান উৎসাহী। রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জন্ম ১৯৫৬ সালের ১৬ অক্টোবর বরিশাল শহরের রেডক্রস হাসপাতালে। রুদ্রের বাবার নাম শেখ ওয়ালীউল্লাহ এবং মায়ের নাম শিরিয়া বেগম। তাদের স্থায়ী নিবাস বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার অন্তর্গত মিঠাখালি গ্রামে, তবে পিতার কর্মস্থল ছিল বরিশাল। তাঁর বাবা পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। দশ ভাই বোনের মাঝে তিনিই ছিলেন সবার বড়।
ঢাকা ওয়েস্ট এন্ড হাইস্কুল থেকে ১৯৭৩ সালে এসএসসি এবং ১৯৭৫ সালে এইচএসসি পাস করেন রুদ্র মোহম্মদ। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ সাতটি। এরমধ্যে রয়েছে উপদ্রুত উপকূল, ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম, মানুষের মানচিত্র, মৌলিক মুখোশ, ছোবল ইত্যাদি। রুদ্র কিছু গল্প আর গানও লিখেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিখ্যাত ও বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে বিয়ে করেন ১৯৮১ সালে। কিন্তু তাঁদের এই দাম্পত্য দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ১৯৮৬ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এর কয়েক বছর পরই ১৯৯১ সালের এই দিনে পরপারে পাড়ি দেন রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়েছিলো কাব্য গ্রন্থ ‘এক গ্লাস অন্ধকার’ (১৯৯২) এবং কাব্যনাট্য ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ (১৯৯২)। মৃত্যুর তিন বছর পর ১৯৯৪ সালে কবির শেষ জীবনের বন্ধু অগ্রজ কবি অসীম সাহার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ গ্রন্থটি। শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থে কবির বেশ কয়েকটি অপ্রকাশিত কবিতাও প্রকাশিত হয়েছিলো।
সংগ্রামী চেতনার বিপ্লবী কবি রুদ্রের ৩১ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সংবাদটি ভালো লাগলে অথবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে লাইক দিন।
পাঠকের মন্তব্য