মো. ওয়ালী উল্লাহ সরকার, জামালগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শেষে নতুন পানি ঢুকছে হাওরে। এসব হাওরে কেউ মাছ ধরছে জীবিকার তাগিদে। আবার কেউ শখের বশে। প্রতিদিনই তাদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির ডিমওয়ালা দেশীয় মাছ। ঝাঁকি জাল, টানা জাল আর টেলা জাল দিয়ে এসব মাছ ধরা হচ্ছে। কেউ বা পাটি বাঁধ দিয়ে ছাইয়ের সাহায্যে ধরছেন এসব মাছ।
জামালগঞ্জের হাওরাঞ্চলে খাল-বিল ও কৃষি জমিগুলোতে ধীরে ধীরে প্রবেশ করছে নতুন পানি। আর এই পানিতে মাছ ধরছেন জেলেরা। হাওরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা। শিশু-কিশোর, বৃদ্ধ সবাই মাছ ধরতে ব্যস্ত। প্রতিদিন তারা ধরছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মা মাছ। অনেকে রাতের বেলায় এককাটা (কুচ) দিয়ে বড় বড় মাছ শিকার করছেন। এ সময় মূলত ধরা পড়ে বোয়াল, শোল-গজার মাছ।
সরজমিনে পাগনার হাওরে মাছ মারারত অবস্থায় জেলে জসীম উদ্দিনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান, বৈশাখের শেষে জ্যৈষ্ঠের প্রথমে মাছ ধরেন তারা। মেঘের সময় বেশি মাছ ধরা পড়ে। ঠান্ডা পড়লে কিংবা বজ্রপাতে মাছ সড়কের বা বাঁধের ধারে আইয়া পড়ে। অখন জালটা ফেলাইলেই আর মিস নাই। ভালা কইরা কয়েকটা কেও দিতে পারলেই হয়।
বজ্রপাত ভয় করে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মরণের কথা চিন্তা করলে কি মাছ মারন যাইব। মাছ ধরার শখ থাকলে মরণের কথা চিন্তা করলে হইত না। পাটি বাঁধ দেওয়া এক জেলের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, সাংবাদিক সাব নেটে ছাইড়েন না। পেটের দায়ে পাটি বান দিয়ে মাছ মারি। নেটে ছাড়লে পুলিশ ধইরা লইয়া যাইব। তখন আর বাচ্চা-খাচ্চা লইয়া মরণ ছাড়া আর উপায় নাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুনন্দা রানী মোদক বলেন, আমরা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মাইকিং ও পোস্টার লাগিয়ে জেলেদের সচেতন করার চেষ্টা করছি। এখন পুকুরে চাষের মাছ বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। একটা মাস যদি জেলেরা এই পোনা না ধরে তাহলে তাদেরই লাভ হবে। কিন্তু বেশির জেলে গরীব হওয়ায় তারা একদিনও বসে থাকতে রাজি নয়। আমরা বেড় জাল, ভিম জাল ও কারেন্ট জাল ব্যবহারকারীদের এবং বাজারে মা মাছ ও ছোট পোনামাছ বিক্রেতাদের আইনের আওতায় এনে জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
পাঠকের মন্তব্য